যে আমলগুলোর জন্য অজু ফরজ ও ওয়াজিব

3 weeks ago 17

ইসলামে অজু কিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধৌত করার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জনের পন্থা ও ইবাদত। কোরআনে আল্লাহ তাআলা নামাজের জন্য অজু করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাজের জন্য উঠবে, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর, মাথা মাসাহ কর এবং টাখনু পর্যন্ত পা (ধৌত কর)। (সুরা মায়েদা: ৬)

এ আয়াত থেকে বোঝা যায় অজুর ফরজ কাজ চারটি। পুরো চেহারা ধোয়া, উভয় হাত কুনুইসহ ধোয়া, মাথা মাসাহ করা এবং উভয় পা টাখনু পর্যন্ত ধোয়া। এ চারটি কাজ করলে অজু হয়ে যায়। এ ছাড়াও অজুর অনেক সুন্নত রয়েছে, দোয়া রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে অজু পরিপূর্ণ হয় এবং সওয়াব লাভ হয়।

নামাজসহ কিছু আমলের জন্য অজু করা ফরজ, কোনো কোনো আমলের জন্য অজু করা ওয়াজিব। এ ছাড়া অনেক আমলের জন্য অজু করা অপরিহার্য না হলেও অজু করে নেওয়া সুন্নত বা মুস্তাহাব। কোনো আমলের উদ্দেশ্য ছাড়াও অজু করা, অজু অবস্থায় থাকা সওয়াবের কাজ। বিভিন্ন হাদিসে অজু অবস্থায় ঘুমানোরও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। কোরআনে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাহকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালবাসেন। (সুরা বাকারা:২২২)

যে ৪ আমলের জন্য অজু ফরজ

১. নামাজ

নফলসহ যে কোনো নামাজের জন্য অজু ফরজ। অজু ছাড়া নামাজ শুদ্ধ হয় না। নামাজের সময় অজু ভেঙে গেলে নামাজও ভেঙে যায়। কোরআনে আল্লাহ তাআলা নামাজ আদায়ের জন্য সুস্পষ্টভাবে অজু করার নির্দেশ ‍দিয়েছেন যা আমরা ওপরে উল্লেখ করেছি।

২. জানাজা

জানাজার নামাজের জন্যও অজু ফরজ। তবে পরিস্থিতি যদি এমন হয় যে জানাজার নামাজ একেবারে সন্নিকটে এবং অজু করতে গেলে জানাজার নামাজের পুরো চার তাকবিরই ছুটে যাবে, তাহলে তয়াম্মুম করে জানাজার নামাজ পড়া যায়।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, অজু করতে গেলে যদি জানাজার নামাজ ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তা হলে তায়াম্মুম করে নামাজ পড়ুন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ১১৫৮৬)

এটা একেবারে অপারগতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অজু করে যদি জানাজার নামাজের শুধু শেষ তাকবির পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে অজু করেই জানাজায় শরিক হতে হবে।

৩. তিলাওয়াত ও শোকরের সিজদা

নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী তিলাওয়াতের সিজদা ও শোকরের সিজদার জন্যও অজু ফরজ। যেহেতু তিলাওয়াত ও শোকরের সিজদা নফল নামাজের মতো, তাই এ সিজদাগুলোর জন্য নামাজের সব শর্ত প্রযোজ্য হবে। তাই তিলাওয়াত ও শোকরের সিজদায় নামাজের মতোই সতর ঢাকা, কিবলামুখী হওয়া, শরীর-পোশাক পবিত্র হওয়া ও অজু-গোসল থাকা জরুরি।

৪. কোরআন স্পর্শ করা

কোরআন স্পর্শ করার জন্য অজু ফরজ। অজু ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা নাজায়েজ। যে গ্রন্থের অধিকাংশ লেখাই কোরআনের আয়াত তা স্পর্শ করার জন্যও অজু থাকা আবশ্যক। এ ছাড়া অন্যান্য গ্রন্থে কোরআনের আয়াত লিখিত থাকলে অজু ছাড়া ওই আয়াত স্পর্শ করা নাজায়েজ।

আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেছেন, নিশ্চয় এটি মহিমান্বিত কুরআন, যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে, কেউ তা স্পর্শ করবে না পবিত্রগণ ছাড়া। তা সৃষ্টিকুলের রবের কাছ থেকে নাযিলকৃত। (সুরা ওয়াকেয়া: ৭৭-৮০)

যে আমলের জন্য অজু ওয়াজিব

তাওয়াফের জন্য অজু ওয়াজিব। নবিজি (সা.) তাওয়াফকে নামাজের সাথে তুলনা করেছেন। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বায়তুল্লাহর তাওয়াফ নামাজের মতো; তবে আপনারা তাওয়াফের মধ্যে কথা বলতে পারেন। (সুনানে তিরমিজি:৯৬০)

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেন, যখন নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাওয়াফ করতে চাইতেন তখন তিনি ওজু করে নিতেন। (সহিহ মুসলিম: ১২৯৭)

ওএফএফ/এমএস

Read Entire Article