যে কারণে ডায়েট করেও অনেকের ওজন কমে না

2 months ago 26

ওজন কমাতে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ডায়েট অনুসরণ করেন। দেখা যায় প্রথমদিকে ১-২ কেজি ওজন কমলেও তা আবার ধরে রাখা দায়। অতিরিক্ত ক্ষুধা কিংবা বিভিন্ন খাবারের প্রলোভনে অনেকেই সঠিক ডায়েট অনুসরণ করতে পারেন না। সেক্ষেত্রে ওজন কমার চেয়ে আবার তা বেড়ে যেতে থাকে।

ডায়েট শুরু করলে ওজন কিছুটা কমলেও আবার মনমতো খাবার খেলে ওজন বাড়ে। ফলে হতাশ হয়ে ডায়েট বন্ধ করে দেন কেউ কেউ। দুর্ভাগ্যবশত এই চক্র স্থূলকায় ব্যক্তিদের ওজন কমানোর যাত্রায় একাধিকবার ঘটে। যা চরম হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

এ বিষয়ে ভারতের ব্যারিয়াট্রিক ও ল্যাপারোস্কোপিক সার্জন ডা. অপর্ণা গোভিল ভাস্কর জানিয়েছেন ঠিক কী কী কারণে অনেকের ক্ষেত্রেই ডায়েট মানলে ওজন সহজে কমে না।

ঘেরলিনের মাত্রা বাড়লে

ঘেরলিন হলো ক্ষুধা-প্ররোচনাকারী হরমোন। ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া স্থূলতার কারণ নয়, বরং ঘেরলিনের মাত্রা বৃদ্ধির প্রভাব। ওজন কমানোর ডায়েট ঘেরলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে, যার ফলে ক্ষুধা বেড়ে যায়।

জিএলপি ১ ও পিওয়াইওয়াই হরমোন কমে যাওয়া

জিএলপি ১ ও পিওয়াইওয়াই এর মতো অন্ত্রের হরমোন ক্ষুধা দমন, তৃপ্তি, ক্ষুধা, রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণসহ আরও অনেক কিছুকে প্রভাবিত করে। ওজন কমানোর ডায়েট জিএলপি ১ ও পিওয়াইওয়াই এর মাত্রা কমিয়ে দেয়।

ফলে কম তৃপ্তি, ক্ষুধা ও লালসা বেড়ে যায়। স্থূলতা ইনসুলিন ও লেপটিন প্রতিরোধের সঙ্গেও যুক্ত। এই হরমোন শক্তির ভারসাম্য বজায় রাখে ও ওজন নিয়ন্ত্রণ করে।

কেন্দ্রীয় হেডোনিক পাথওয়ের উদ্দীপনা বাড়লে

স্থূলকায় ব্যক্তিদের মধ্যে খাবারের প্রতি স্নায়বিক প্রতিক্রিয়া পরিবর্তিত হয়। রিওয়ার্ড পাথওয়ে বা হেডোনিক পাথওয়ে মানব মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি স্নায়বিক পথ। কেন্দ্রীয় হেডোনিক পাথওয়ের উদ্দীপনা স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের খাওয়ার আচরণকে পরিবর্তন করতে পারে।

পিত্ত অ্যাসিডের মাত্রা দুর্বল হলে

পিত্ত অ্যাসিডগুলো গ্লুকোজ ও শক্তির ভারসাম্য রক্ষা করে। অন্যান্য ক্রিয়াকলাপের পাশাপাশি, তারা জিএলপি ১ সক্রিয় করতেও সাহায্য করে। স্থূলতার রোগীদের মধ্যে, সঞ্চালনকারী পিত্ত অ্যাসিডের মাত্রা দুর্বল হয়।

মিষ্টির খাবার খাওয়ায়

স্থূলকায় ব্যক্তিদের মিষ্টি স্বাদের প্রতি কম সংবেদনশীলতা থাকে। একই স্বাদের উপলব্ধি পেতে তারা অনেক বেশি মিষ্টি খেতে পারে। শক্তির ভারসাম্য, স্বাদ ও গন্ধের সংকেতের মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ মিথস্ক্রিয়া আছে।

জেনেটিক্স সমস্যার কারণে

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৭০ শতাংশ স্থূলতার জন্য জেনেটিক্স দায়ী। স্থূলতা মনোজেনিক, সিন্ড্রোমিক বা পলিজেনিক হতে পারে। পলিজেনিক স্থূলতা সবচেয়ে সাধারণ।

এই তত্ত্ব বলে যে মানবদেহ একটি পছন্দের সীমার মধ্যে তার ওজন বজায় রাখার চেষ্টা করে। যতবারই আমরা ওজন কমানোর প্রবণতা করি, শরীর কিন্তু নির্দিষ্ট ওজনে ফিরে আসার প্রবণতা রাখে।

স্থূলতা সব সময় স্ব-প্ররোচিত নয়। ইচ্ছাশক্তির সঙ্গে স্থূলতার কোনো সম্পর্ক নেই। এটি অন্য যে কোনো রোগের মতোই একটি রোগ। এর কার্যকর ফলাফল পেতে পদ্ধতিগতভাবে ও পর্যায় অনুসারে চিকিৎসা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

জেএমএস/জিকেএস

Read Entire Article