যে টেস্টে ক্রিকেট ছাপিয়ে মাঠের বাইরের ‘সাকিবকে’ ঘিরে উত্তেজনা

7 hours ago 3

ঘড়ির কাটা তখনো বিকেল সাড়ে তিনটা অতিক্রম করেনি। শেরে বাংলার প্রধান ও মিডিয়া গেটের সামনের সড়কে সাকিব পক্ষ ও সাকিব বিরোধিদের মারামারি তখন প্রায় থেমে গেছে। ঠিক এ অবস্থায় সেনা, নৌ ও পুলিশ বাহিনীর তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনিতে প্র্যাকটিস শেষে মাঠ ছাড়লো দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল।

প্রোটিয়া ক্রিকেটাররা হয়ত কিছুই জানলো না যে, তাদের অনুশীলনের শেষ ভাগে হোম অব ক্রিকেটের মূল প্রবেশ দ্বার ও মিডিয়া গেটের সামনে পশ্চিম দিকের রাস্তাটা প্রায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল।

সাকিব আল হাসান ভক্ত ও সমর্থকদের সমাবেশের মধ্যে লাঠি, বাশ ও ইট হাতে ঢুকে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। যদিও ওই আক্রমণে তেমন কেউ আহত হয়নি। সেটা ছিল মূলতঃ সাকিবিয়ানদের ধাওয়া দেয়ার মিশন। অবশ্য সেনাবাহিনীর সদস্যদের সময়োচিত হস্তক্ষেপে সে মিশন সফল হয়নি। তা না হলেও প্রায় এক ঘণ্টা শেরে বাংলার পশ্চিম দিকের বাইরের সড়কটা বেশ উত্তপ্ত ছিল। পরের ঘণ্টায় পুরো এলাকা হয়ে পড়ে থমথমে।

ওই পরিস্থিতি দেখতে এবং কভার করতে শেরে বাংলায় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রায় সবাই দক্ষিণ আফ্রিকার প্র্যাকটিস বাদ দিয়ে প্রেস বক্স ছেড়ে মাঠে রাস্তায় চলে আসেন এবং বেলা সোয়া ৪টা পর্যন্ত প্রায় শ’খানেক সাংবাদিক ওই উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন।

রাত পোহালে বাংলাদেশ আর দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট, তার আগের বিকেল- সাধারণতঃ এই সময়টা ক্রিকেট রিপোর্টারদের কাটে প্রেস বক্সে। প্রিভিউ, দুই দলের অধিনায়ক, প্রশিক্ষকের প্রেস কনফারেন্সের কথা বার্তা ও টেস্টের নানা দিক নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে; কিন্তু সেখানে আজ রোববার বিকেলের প্রায় তিনঘণ্টা কাটলো মাঠের বাইরের উত্তেজনা দেখে ও তা নিয়ে লিখে।

সত্যি বলতে, মিরপুরে আগামীকাল সোমবার, ২১ অক্টোবর থেকে যে টেস্ট ম্যাচ শুরু হচ্ছে, তার আগে স্টেডিয়ামের বাইরে ও মিডিয়ায় ক্রিকেটটাই কম। ক্রিকেট ছাপিয়ে সেখানে চলে এসেছে সাকিব ভক্ত ও বিরোধীদের হুড়োহুড়ি, হট্টগোল, মারামারি।

বলার অপেক্ষা রাখে না, টেস্ট ম্যাচের আগেরদিন দুপুর থেকে অনেক রাত পর্যন্ত ম্যাচ কাভার করা ক্রিকেট রিপোর্টারদের সময় কাটে প্রিভিউ লিখে। রিপোর্টাররা ব্যস্ত ও মনোযোগী থাকেন প্র্যাকটিস কভার করা, প্রেস কনফারেন্সে দুই দলের কোচ ও ক্যাপ্টেনের কথা-বার্তা, লক্ষ্য-পরিকল্পনার কথা লিখে।

সেখানে ঢাকা টেস্টের ঠিক আগের দিন বিকেলে শেরে বাংলায় উপস্থিত সাংবাদিকদের সময় কাটলো মাঠের বাইরের উত্তেজনা, স্পটে গিয়ে ভিডিও করে, ছবি তুলে ও বর্ননা লিখে।

ভক্ত ও সমর্থকদের চিন্তা, ভাবনা আসলে যাই হোক না কেন, রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় শেরে বাংলার প্রেসবক্সে বসে কাজ করা ক্রিকেট রিপোর্টাররা মাঠের বাইরের গোলমাল কভার করা নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয়ছে।

ঠিক বিকেল সোয়া ৫টায় খবর এলো, ৪টার পরে শেরে বাংলার মূল গেট আর মিডিয়া গেটের মাঝখানের ২৫০ গজ জায়গায় যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল, এক থেকে দেড় ঘণ্টা তা স্তিমিত থাকলেও ৫টার পর থেকে হোম অব ক্রিকেটের বাইরে আবার মারামারি শুরু হয় এবং পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।

এমন অবস্থা চলতে থাকলে সোমবার মিরপুর টেস্ট শুরুর দিন উত্তেজনা আরও বাড়বে। সচেতন ক্রিকেট অনুরাগিদের ধারনা, পক্ষ-বিপক্ষ বিবেচনায় না শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের অন্তত ৪/৫’শ গজের ভেতরে জন-সমাবেশ নিষিদ্ধ করলে হয়তো এ উত্তেজক অবস্থা ও দু’পক্ষের মারামারি এড়ানো যেত।

এআরবি/আইএইচএস

Read Entire Article