যে ৬ অভ্যাস নীরবে আপনাকে সবার প্রিয় করে তুলবে

10 hours ago 4

অফিস, ক্লাসরুম বা বন্ধুদের গ্রুপ — প্রায় প্রতিটি জায়গাতেই কিছু মানুষ থাকে যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অন্যদের নজর কেড়ে নেয়। তাদের সঙ্গে সবাই কথা বলতে চায়, প্রয়োজনে সাহায্য চায়। এমন মানুষদের মধ্যে এমন কিছু অভ্যাস আছে, যা তাদের অন্যদের চেয়ে আলাদা করে তোলে।

কিন্তু তারা কখনো বেশি চিৎকার করেন না, নিজেদের গল্প বা কীর্তি অতিরঞ্জিত করে শোনান না। বরং প্রতিদিন সচেতনভাবে নেওয়া ছোট ছোট সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তারা সবার কাছে নিজের উপস্থিতি প্রকাশ করেন।

কী সেই অভ্যাসগুলো? জেনে নিন এমন ছয়টি অভ্যাস, যা আপনাকেও সবার কাছে ভরসা ও পছন্দের মানুষে পরিণত করতে পারে -

১. বড় বড় কথা নয়, বরং কথা দিয়ে কথা রাখা

বড় বড় কথা বা লোক দেখানো আচরণের মাধ্যমে বিশ্বাস তৈরি হয় না। বিশ্বাস তৈরি হয় প্রতিশ্রুতি রক্ষার মাধ্যমে। হোক তা একটা ইমেল পাঠানো, কোনো কাজ সম্পন্ন করা বা শুধু উপস্থিত থাকা। ছোট ছোট প্রতিশ্রুতি রক্ষা করাও অন্যের কাছে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়। বিশ্বে সেরা সফল ব্যক্তিরা তাদের কথাকে চুক্তি হিসেবে দেখেন।

যে ৬ অভ্যাস নীরবে আপনাকে সবার প্রিয় করে তুলবে

নিজেকে অন্যের চোখে সম্মান ও ভরসাযোগ্য মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করার এটি একটি সূক্ষ্ম কিন্তু শক্তিশালী উপায়।

২. অন্যের ওপর দোষ না চাপিয়ে নিচের ভুল স্বীকার করা

মানুষ মাত্রই ভুল হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু মানুষের ব্যক্তিত্বে পার্থক্য তৈরি করে সেই ভুলে তার প্রতিক্রিয়া। ব্যক্তিত্ববান ব্যক্তি ভুল করে অজুহাত তৈরি করেন না, অন্যের ঘাড়ে দোষও দেন না। তারা সরাসরি দায়িত্ব নেন।

ভুল স্বীকার করা বিশ্বাস তৈরি করে। আবার এটি সমস্যা দ্রুত সমাধানের পথও তৈরি করে। ভুল স্বীকার করার সাহস তাদের সততার খ্যাতি তৈরি করে।

৩. সাফল্যের কৃতিত্ব ভাগাভাগি করা

যেকোনো কাজের সাফল্যের পিছে সাধারণত একটি দলগত প্রয়াস থাকে। বিশেষ করে পেশাগত কাজে। প্রকৃতিকভাবে যাদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণ আছে, তারা সাধারণত দলের অন্যদের সঙ্গে সাফল্য ও কৃতিত্ব ভাগাভাগি করে নেন। একটি ছোট্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ অন্যের চোখে তার সম্মান বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।

যে ৬ অভ্যাস নীরবে আপনাকে সবার প্রিয় করে তুলবে

৪. অন্যের সময়ের গুরুত্ব দেওয়া

সময়কে সম্মান দেওয়া মানুষকে সহজে অন্যের কাছে প্রিয় করে তোলে। যখন কেউ সময়মতো আসে, অন্যের ব্যস্ত সময়সূচীকে মূল্যায়ন করে এবং সময় নষ্ট করে না, তখন তার দায়িত্বশীলতা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং অন্যের প্রতি যত্নশীল হওয়ার মতো গুণগুলো প্রকাশ পায়। এমন আচরণ স্বাভাবিকভাবেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। মানুষ তাদের সহজে বিশ্বাস করে এবং আড্ডা বা সহযোগিতায় আনন্দ পায়। সংক্ষেপে, অন্যের সময়কে গুরুত্ব দেওয়া হলো প্রিয় হওয়ার একটি অদৃশ্য, কিন্তু শক্তিশালী পদ্ধতি।

যে ৬ অভ্যাস নীরবে আপনাকে সবার প্রিয় করে তুলবে

৫. স্বাস্থ্যকর সীমারেখা ঠিক করা

স্বাস্থ্যকর সীমারেখা একজন মানুষকে অন্যের কাছে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। কারণ যখন কেউ অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতি না নিয়ে স্পষ্টভাবে ‘না’ বলতে পারে বা সীমা নির্ধারণ করে, তখন মানুষ তাদের প্রতি বিশ্বাস পায় এবং সম্মান করে। এই ধরনের আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং সততা মানুষকে সহানুভূতিশীল ও নির্ভরযোগ্য বানায়, যার ফলে তারা সহজে সবার কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে।

৬. গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া

ফিডব্যাক বা প্রতিক্রিয়া উন্নতির জন্য অপরিহার্য, তবে দেওয়ার ধরনই প্রকৃত পার্থক্য গড়ে। কঠোর সমালোচনার বদলে বলুন, ‘আমি মনে করি এটাকে আরও ভালো করা যায়।’ এতে কাজের মান বাড়ে, ব্যক্তিকে সম্মান দেওয়া হয় এবং বিশ্বাস তৈরি হয়। নিয়মিত সতর্ক ও সৎ ফিডব্যাক এমন একটি সংস্কৃতি তৈরি করে যেখানে সবাই একসঙ্গে শেখে ও উন্নতি করে।

সূত্র: টাইমস আব ইন্ডিয়া

এএমপি/জেআইএম

Read Entire Article