বাংলাদেশে এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক, বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত সেবার জন্য আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আগে যেখানে শুধু টিআইএন সার্টিফিকেট লাগত, এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রিটার্ন জমার স্লিপ বা সনদ দিতে হবে। নিচে এক নজরে দেখুন কোথায় কোথায় রিটার্ন লাগবে, আর না দিলে কী অসুবিধা হতে পারে।
১. সঞ্চয়পত্র ও পোস্টাল সেভিংস
পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে রিটার্নের প্রমাণ লাগবে। সঞ্চয়পত্র কেনার সময় আবেদনকেন্দ্রেই এটি জমা দিতে হবে।
২. ব্যাংকিং সুবিধা
পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণ নিতে হলে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র আবশ্যক। ব্যাংকে জমার সুদ আয়ের ক্ষেত্রে রিটার্ন থাকলে উৎসে কর কাটা হবে ১০%, না থাকলে ১৫%।
৩. জমি ও ফ্ল্যাট লেনদেন
সিটি কর্পোরেশন, জেলা সদর বা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ১০ লাখ টাকার বেশি জমি বা ফ্ল্যাট কিনতে, বিক্রি করতে বা দলিল হস্তান্তরে রিটার্নের স্লিপ জমা দিতে হবে।
৪. ক্রেডিট কার্ড
যেকোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে রিটার্ন জমার প্রমাণ দিতে হবে।
৫. গাড়ি নিবন্ধন ও ফিটনেস নবায়ন
দুই বা তিন চাকা বাদে সব মোটরগাড়ির জন্য রিটার্ন স্লিপ বাধ্যতামূলক।
৬. শিক্ষা
সিটি কর্পোরেশন বা জেলা সদর এলাকায় ইংলিশ মিডিয়াম/ইংলিশ ভার্সন স্কুলে ভর্তি করাতে রিটার্ন লাগবে।
৭. গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ
বাণিজ্যিক বা শিল্প গ্যাস সংযোগ, এবং সিটি কর্পোরেশনে আবাসিক গ্যাস সংযোগের জন্য রিটার্ন প্রয়োজন। সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্টে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে রিটার্নের প্রমাণ লাগবে।
৮. বাড়িভাড়া থেকে আয়
ভাড়ার আয় যতই হোক, রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।
৯. চাকরি ও বেতন
সরকারি খাতে: মূল বেতন মাসে ১৬ হাজার টাকা বা তার বেশি হলে রিটার্ন দিতে হবে।
বেসরকারি খাতে: বার্ষিক আয়ের জন্য রিটার্ন প্রমাণপত্র প্রয়োজন। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।
১০. নকশা অনুমোদন
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী শহরে ভবন নির্মাণের অনুমোদনের জন্য রিটার্ন প্রমাণ দিতে হবে।
১১. জনপ্রতিনিধি হতে
সংসদ, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদ বা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে রিটার্ন জমা দিতে হবে।
১২. ট্রেড লাইসেন্স
সিটি কর্পোরেশন বা পৌর এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া বা নবায়নের জন্য রিটার্ন লাগবে।
১৩. ডিজিটাল ব্যবসা
অনলাইনে পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে হলে রিটার্নের প্রমাণপত্র আবশ্যক।
১৪. অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র
>> মোবাইল ব্যাংকিং
>> আয়ের ক্ষেত্রে
>> সমবায় সমিতি বা ক্লাবের সদস্যপদ
>> পেশাজীবী সংগঠন (ডাক্তার, আইনজীবী, প্রকৌশলী ইত্যাদি)
>> আমদানি-রপ্তানি সনদ বা এলসি খোলা
>> কোম্পানি পরিচালকের পদ
>> বিভিন্ন লাইসেন্স (অস্ত্র, ওষুধ, পরিবেশ, অগ্নি-নিরাপত্তা, ইটভাটা, পরিবহন ইত্যাদি)
>> এনজিও বা মাইক্রো ক্রেডিট সংস্থার বিদেশি অনুদানের ছাড়।
আরএমডি/এএমপি/জেআইএম