যোগাযোগ ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা না এলে তা অর্থনীতির জন্য গলার ফাঁস হবে

14 hours ago 6

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই হ-য-ব-র-ল অবস্থায় রয়েছে। এটাকে দ্রুত শৃঙ্খলার মধ্যে আনা না গেলে পুরো ব্যবস্থাটা অর্থনীতির জন্য গলার ফাঁসে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এই কাজটা করতে হবে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে। নদীর ওপর কোনো আঘাত করা যাবে না, পানিকে শান্ত রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে পানি আমাদের জন্য বিরাট সম্পদ।

রোববার (২ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘সেন্ট্রাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট সেক্টর মাস্টারপ্ল্যান অব বাংলাদেশ’ সংক্রান্ত প্রান্তিক মূল্যায়ন ও কৌশলগত পরিকল্পনা বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ড. ইউনূস বক্তৃতাকালে প্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্ত রেখে সড়ক, রেল, বিমান ও নৌপথের সম্মিলিত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পদস্থ কর্মকর্তারা।

বৈঠকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ একটি প্রাথমিক কৌশলগত পরিকল্পনা উপস্থাপন করে, যা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে তৈরি করেন।

এই পরিকল্পনায় দেখানো হয়, পুরো দেশের সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থার সমন্বয় এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অল্পবিস্তর সংস্কার ও সংযোজনের মাধ্যমে কীভাবে পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসা যায়।

এতে বলা হয়, দেশে বর্তমানে থাকা রেলপথ, নৌপথ এবং সড়কপথের যথাযথ ব্যবহার ও কিছু ক্ষেত্রে কিছুটা বাড়ানো গেলে এ ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি করা সম্ভব।

যোগাযোগ খাতের সবগুলো ব্যবস্থাকে সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা প্রণয়ন করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই পরিকল্পনার ফলে প্রাথমিকভাবে একটি শক্তিশালী ধারণা পাওয়া গেল। এখন এটিকে বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন, পুরো পরিকল্পনাটা করতে হবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে মাথায় রেখে। অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনার পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা যখন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নদীর কথা চিন্তা করবো, তখন অবশ্যই আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে, নদীগুলো আমাদের প্রাণ।

প্রাথমিক পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন বলেন, যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি সামষ্টিক মডেল দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনভাবে কাজ করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে যেন অর্থনৈতিক লাইফলাইনটা গড়ে ওঠে।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, যেসব ক্ষেত্রে ছোট ছোট কিছু সড়ক নির্মাণ করে দিলেই পুরো অঞ্চলটাকে জাতীয় কানেক্টিভিটির মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব, সেসব ক্ষেত্রে দ্রুত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের কাজগুলোকে আরও পরিকল্পিতভাবে করার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগে একটি প্ল্যানার্স উইং গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়।

বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রামে আরও তিনটি নতুন বন্দর চালু হবে। এটাকে বিবেচনায় রেখে অবশ্যই এসব বন্দর থেকে সড়ক যোগাযোগ যেন সহজ ও কার্যকর হয় সে বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে উদ্যোগ নিতে হবে।

এমইউ/এএমএ/এমএস

Read Entire Article