যৌতুকসহ ৮ আইনে সরাসরি মামলা নেবে না আদালত

12 hours ago 5

ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙ্গামাটি, সিলেট, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ জেলায় পারিবারিক আদালত আইন, যৌতুক নিরোধ আইনসহ আটটি আইনের অধীনে আদালতে সরাসরি মামলা করা যাবে না।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হওয়া নতুন বিধান অনুযায়ী, এসব মামলার আগে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আর বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সিলেটে নতুন বিধির উদ্বোধন করেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আইন সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর ধারা ১(২) এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও রাঙ্গামাটি জেলায় মামলাপূর্ব বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার বিধান চালু করা হয়েছে।

কোন কোন আইনে সরাসরি মামলা নয়—
১. পারিবারিক আদালত আইন (২০২৩) এর ধারা ৫ সংক্রান্ত মামলা
২. বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন (১৯৯১) এর বিরোধ
৩. সহকারী জজ আদালতের এখতিয়ারভুক্ত বণ্টন বিরোধ
৪. স্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ট্যানেন্সি অ্যাক্ট (১৯৫০) এর অগ্রক্রয় সংক্রান্ত বিরোধ
৫. নন-অ্যাগ্রিকালচারাল ট্যানেন্সি অ্যাক্ট (১৯৪৯) এর অগ্রক্রয় সংক্রান্ত বিরোধ
৬. পিতামাতার ভরণপোষণ আইন (২০১৩) এর অধীন বিরোধ
৭. যৌতুক নিরোধ আইন (২০১৮) এর ধারা ৩ ও ৪ এর অভিযোগ
৮. নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (২০০০) এর ধারা ১১(গ) অনুযায়ী যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগ।

গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, চিফ লিগ্যাল এইড অফিসার (বিচারক) কর্তৃক প্রত্যায়িত প্রতিটি মধ্যস্থতা চুক্তি চূড়ান্ত, বলবৎযোগ্য এবং পক্ষগণের ওপর বাধ্যতামূলক হবে। আদালতে তা ডিক্রি বা চূড়ান্ত আদেশ হিসেবে গণ্য হবে।

নতুন অধ্যায়ের সূচনাকে স্মরণীয় করে রাখতে গত বুধবার বিকেলে সিলেটের গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, আমরা যে পরিবর্তন করেছি, পরবর্তী সরকার যদি তা ধরে রাখে তাহলে দেশে ন্যায়বিচার আরও প্রসারিত হবে। দরিদ্র ও অসহায় মানুষের আইনগত প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ বহুগুণে বাড়বে।

তিনি বলেন, আমরা সিভিল ও ক্রিমিনাল আদালতকে পৃথক করেছি, যেন সিভিল আদালতে মামলার নিষ্পত্তি দ্রুত হয়। বিচারিক পদ সৃজনের ক্ষমতা রাজনৈতিক মন্ত্রীদের কাছ থেকে নিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে দেওয়া হয়েছে।

মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে ড. নজরুল বলেন, প্রথমত, মামলা দায়েরের আগে লিগ্যাল এইডে যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, নির্দিষ্ট কিছু আইনকে মধ্যস্থতার আওতায় আনা হয়েছে। তৃতীয়ত, লিগ্যাল এইডে এখন দায়িত্বে থাকবেন সিনিয়র যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ।

‘অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের যুক্ত করা হয়েছে। কারণ তারা অভিজ্ঞ, সম্মানীয় এবং শারীরিকভাবে সক্ষম’- যোগ করেন তিনি।

এফএইচ/এমকেআর

Read Entire Article