রহিম স্টিল মিলে শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট

4 months ago 55

এক দশক ধরে নারায়ণগঞ্জের রহিম স্টিল মিলে ‘শতাধিক শ্রমিকের মৃত্যুতে’ তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে।

গত ২৩ মে জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. লুৎফুর রহমানের (রাসেল)পক্ষে ব্যারিস্টার নেওয়াজ মোরশেদ এই রিট দায়ের করেন।

দুর্ঘটনার পরে গঠিত পৃথক তিনটি সংস্থার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। সঙ্গে রহিম স্টিল মিলে নিহত- আহতদের (ভিকটিম) বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করে দুর্ঘটনার সার্বিক অবস্থার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের আর্জি জানানো হয়েছে ।

রিটে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ইন্সপেক্টর জেনারেল), পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, রহিম স্টিল মিলস কো: প্রা: লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ফেরো এলয় কো: প্রা: লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়েরের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ব্যারিস্টার নেওয়াজ মোরশেদ।

গত ২৫ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে ‘রহিম স্টিল মিলে শতাধিক শ্রমিকের মৃত্যু ক্ষতিপূরণ ও বিচারের অপেক্ষায় স্বজনরা/ তিন সংস্থার তদন্ত রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি আট বছরেও’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট করা হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এক দশকে শতাধিক শ্রমিকের মৃত্যু হয় রহিম স্টিল মিলসে। ২০১৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে এ নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ভুক্তভোগীদের কাছে ছুটে যায়। পরিবেশবাদীরাও সোচ্চার হন। শ্রমিক সংগঠনগুলো বিবৃতি দেয়। রাজধানীতে মিছিল ও মানববন্ধন করে।

‘কলকারখানা এবং প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর’ তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে তদন্ত চালায়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অতিরিক্ত জেলা জজ শরীফউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের উচ্চতর কমিটি গঠন করে তদন্ত করে। পরিবেশ অধিদপ্তর রহিম স্টিল মিলের প্রাণঘাতী কোয়ার্টজ উৎপাদনকারী ‘মৃত্যুকূপ’ বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে বেশ তোড়জোড় চললেও কিছু দিন যেতেই থেমে যায় সব তৎপরতা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রহিম স্টিল মিলস লিমিটেডের’ ক্রাশিং সেকশনে কাজ করে ১০ বছরে শতাধিক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ কিংবা মৃত্যুপথযাত্রী আরও দুই শতাধিক। প্রতিষ্ঠানটিতে শ্রমিক হিসেবে যিনি ২ মাস কাজ করেন, তার মৃত্যু অবধারিত।

রুলিং মিল এবং পার্টিকেল বোর্ড তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ‘কোয়ার্টজ পাউডার’। চুনা পাথর, বরিক পাউডার, পটাশিয়ামসহ কয়েক ধরনের কেমিক্যালের সংমিশ্রণে উৎপাদন করা হতো কোয়ার্টজ পাউডার। এ পাউডার এক সময় ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হতো। পরে রহিম স্টিল মিলস কর্তৃপক্ষ নিজেরাই পাথর মেশিনে গুঁড়া করে কোয়ার্টজ পাউডার উৎপাদন শুরু করে। রোলিং মিলে পাথর গুঁড়া করার কোনো অনুমোদন ছিল না।

এফএইচ/এসআইটি/এমএস

Read Entire Article