আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়েছে এক ভিন্ন রং। প্রার্থী হয়েছেন এক দম্পতি। স্বামী-স্ত্রী দুজনই একসঙ্গে ভোটের মাঠে। ক্যাম্পাসজুড়ে তাদের প্রচারণা ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।
স্বামী হাবিবুর রহমান পড়ছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। শিক্ষাবর্ষ ২০২১-২২। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কেন্দ্রীয় সংসদে নির্বাহী সদস্যপদে। আর স্ত্রী সানজিদা ইসলাম পড়ছেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে। শিক্ষাবর্ষ একই—২০২১-২২। তিনি মন্নুজান হল সংসদে সাহিত্য ও বিতর্ক সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন।
কেন তারা নেতৃত্বে আসতে চান, তা নিয়ে এই প্রার্থী দম্পতির সঙ্গে কথা হয় কালবেলার। সানজিদা ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই আমরা ক্লাব আর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। সিনিয়রদের দিকনির্দেশনা আর নিজেরা অর্জিত অভিজ্ঞতাই আমাদের নির্বাচনে আসার পথ তৈরি করেছে। আমরা চাই শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করতে।’
হাবিবুর রহমান যোগ করেন, ‘আমরা ভিন্ন পদে লড়ছি। আমি কেন্দ্রীয় সংসদের নির্বাহী সদস্য পদে ১৯ নম্বর ব্যালটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমার স্ত্রী ১ নম্বর ব্যালটে মন্নুজান হলে প্রার্থী। তিন বছরের ক্যাম্পাস অভিজ্ঞতা আমাদের শিখিয়েছে—এই দুটি জায়গায় আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য সেরা সেবা দিতে পারব।’
প্রচারণা নিয়ে তিনি বলেন, ‘লম্বা ছুটির কারণে অনেক শিক্ষার্থী হলে নেই। ভোটারদের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবে কোনো নেতিবাচক অভিজ্ঞতা হয়নি। বরং প্রচুর সমর্থন ও অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ জয়ী হব।’
শিক্ষার্থীরাও দম্পতির প্রার্থিতা নিয়ে উচ্ছ্বসিত। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মরিয়ম আক্তার বলেন, ‘ব্যাপারটা আকর্ষণীয়। ক্লাস, সংসার আর নির্বাচনী দায়িত্ব একসঙ্গে সামলানো সহজ নয়। তবে তারা যদি দায়িত্বশীল হন, শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবেন।’
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তন্ময় বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নির্বাচনে এসেছে—এটা আমাদের ক্যাম্পাসে নতুন রং এনেছে। সবাই মজা করে হলেও আগ্রহ নিয়ে দেখছে।’
উল্লেখ্য, এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাকসু) নির্বাচনে দম্পতি প্রার্থী হওয়ার নজির আছে। ডাকসুতে শিবির-সমর্থিত প্যানেল থেকে রায়হান উদ্দিন ও উম্মে সালমা জয়ী হয়েছিলেন। জাকসুতে সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট থেকে জয় পান তারিকুল ইসলাম ও নিগার সুলতানা। তাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখন মজা করে বলছেন—‘রাকসুতে শুরু হলো দম্পতি অধ্যায়।’