রাকসুতে দুঃখ ঘোচাতে চায় ছাত্রদল, জয় পেতে মরিয়া শিবির

2 hours ago 6
৩৫ বছর পর আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত দুটি শক্তি হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবির। ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের পর এবার রাকসুকে ঘিরে নতুন ভোরের প্রত্যাশায় মাঠে নেমেছে ছাত্রদল। কৌশলী প্যানেলের পাশাপাশি ভিন্ন ধাঁচের প্রচারণাতেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করার প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।  এদিকে ছাত্রশিবিরের নেতা ও জনশক্তি তৈরির আঁতুরঘর হিসেবে পরিচিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে ডাকসু-জাকসুর মত শিবির প্যানেলের ভূমিধস বিজয়ের প্রত্যাশা নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন নেতাকর্মীরা। ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ নামের বৈচিত্র্যময় প্যানেল করে প্রথমেই চমক দেখিয়েছে ছাত্রশিবির। প্যানেলে সাবেক সমন্বয়ক, সনাতনধর্মী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো যোদ্ধা, সংস্কৃতিকর্মী ও নারী শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রচারণার ক্ষেত্রেও বৈচিত্র্যময় বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস চষে বেড়াচ্ছেন প্যানেলের প্রার্থীরা। ফলে ডাকসু-জাকসুর মত কেন্দ্রীয় সংসদের অধিকাংশ পদে জয়ের ফলস ঘরে তুলতে যারপরনাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।  রাবি ক্যাম্পাসে জয় পেতে কৌশলী ছাত্রদল গত ৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাকসুর ২৩টি পদে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করে। এতে ছাত্রদলের ‘নির্যাতিত’ ও ‘ক্লিন ইমেজের’ নেতা-কর্মীদের সামনে রাখা হয়েছে। সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাইরেও জাতীয় দলের ফুটবলার, রাজশাহী ফুটবল দলের গোলকিপার, প্রথম বর্ষের শির্ক্ষার্থী, ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা, ডিনস পুরস্কারজয়ী শিক্ষার্থীরা প্যানেলে জায়গা পেয়েছেন। শীর্ষ তিন পদের একটিতেসহ চার নারী শিক্ষার্থীও আছেন প্যানেলে।   ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর অত্যন্ত নম্র-ভদ্র ও সদা হাস্যেজ্জ্বল একজন শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাসে তার ইতিবাচক কর্মকাণ্ড এবং নেতৃত্বগুণ তাকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই গ্রহণযোগ্য করেছে। তিনি শিক্ষার্থীদের অধিকার ও সমতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। প্যানেলের জিএস পদে রয়েছেন নাফিউল জীবন। তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হাতে বার বার নির্যাতিত ও কারাবরণকারী ছাত্রনেতা। আর এজিএস প্রার্থী জাহিন বিশ্বাস এষা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সামনের সারির একজন যোদ্ধা। এই নারীর নেত্রীর আন্দোলন-অভিজ্ঞতাকে ছাত্রদল কৌশলগতভাবে কাজে লাগাচ্ছে। এ ছাড়া প্যানেলে জাতীয় দলের খেলোয়াড়, গায়ক, জনপ্রিয় সাধারণ শির্ক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক কর্মী অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের কাছে বৈচিত্র্যময় আবেদন তৈরির করতে চাইছে।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভৌগোলিকভাবে রাজশাহী অঞ্চল অনেকটা বিএনপির ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত। তবে বরাবরের মতই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শিবিরের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু রাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল শীর্ষ পদে ক্লিন-ইমেজ ও অন্যান্য পদে বৈচিত্র্যময়তা এনে চমক দেখিয়েছেন। প্রচারণার ক্ষেত্রেও তারা অবলম্বন করেছেন কৌশল। ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শেখ নুর উদ্দিন আবীর অনেকটা নম্র-ভদ্র ও সুদর্শন হওয়ায় তিন মাত্র দুই-তিনজনকে সঙ্গে নিয়ে অত্যন্ত সাধারণভাবে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। নিজের স্বভাবসুলভ হাস্যেজ্জ্বল ভঙ্গিতে ভোট নিজের জ্বালে ফেলতে ভোটারদের নানাভাবে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন।  জিএস পদে নাফিউল জীবনও চেষ্টা করছেন সর্বোচ্চ। আর এজিএস পদে জাহিন বিশ্বাস এষা নারী শিক্ষার্থী হওয়ার পরও তিনি দিনরাত ভোটারদের কাছে ছুটে বেড়াচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থীদের ভোট পেতে তিনিও তার কৌশলী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি জয়ী হলে নারী শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়গুলো তিনি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। জুলাই আন্দোলনে তার সক্রিয় অংশগ্রহণের বিষয়টির মাধ্যমেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন।  এছাড়া ক্রীড়া ও খেলাধুলাবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী জাতীয় নারী ফুটবল দলের খেলোয়ার নার্গিস খাতুনও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের কাছে পরিচিত মুখ। তিনিও ছাত্রদলের প্যানেল থেকে ভোট করায় শিক্ষার্থীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় সংসদের বাকি পদগুলোর প্রার্থীরাও ক্লিন ইমেজ ও পরিচিত মুখ হওয়ায় তারা ছাত্রদলের প্যানেলকে শিক্ষার্থীদের মাঝে ইতিবাচক হিসেবে দাঁড় করাচ্ছেন। ছাত্রদলের প্যানেলে ফ্যাক্টর প্রথম বর্ষের ৪ হাজার ভোট ছাত্রদলের কয়েক দফা টানা আন্দোলনের ফলে রাকসু নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রথম বর্ষের ৪ হাজার ৩০৭ জন শিক্ষার্থী ভোটর হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ক্রেডিট ছাত্রদলই নিচ্ছেন। সঙ্গত কারণেই ছাত্রদল প্যানেলের প্রার্থীরা মনে করছে, প্রথম বর্ষের এ চার হাজারের অধিক ভোট ছাত্রদল প্যানেলেও বাক্সেই যাবে। এটি ছাত্রদলের জয়ের ক্ষেত্রে বাড়তি সুযোগ বলে মনে করছেন তারা। প্রথম বর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বললে বেশিরভাগই ছাত্রদল প্যানেলের ভোট দেয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন।  আবু মোস্তফা হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রদল আন্দোলনের মাধ্যমে রাকুস নির্বাচনে আমাদের ভোটার হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তাই রাকসু নির্বাচনে ভোটটি ছাত্রদল প্যানেলই পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করি। তার মত অনেকেই ছাত্রদল প্যানেলকেই ভোট দিবেন বলে জানান তারা।  ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী নাফিউল জীবন বলেন, ‘ডাকসু ও জাকসুর অভিজ্ঞতা থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। এবার আমরা নতুন উদ্যম, শিক্ষার্থীদের আস্থা ও সমর্থন নিয়ে রাকসুতে ইতিবাচক ফলাফলের বিষয়ে আশাবাদী। নতুন মুখ মানেই নতুন চিন্তা, নতুন চেতনা এবং নতুন ভাবনা। শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধানে উদ্যম ও সততাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি—এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সহিংসতা নয়, শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জনের জন্য কাজ করছি। শান্তিপূর্ণ প্রচারণা ও সমস্যার সমাধানের পরিকল্পনাই আমাদের বিজয়ী হওয়ার প্রধান বিষয়।’ ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর বলেন, ‘ডাকসু কিংবা জাকসুর সাথে রাকসুর তুলনা করা যথার্থ হবে না। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবেশ, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আলাদা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আচার-আচরণ, চলাফেরা এবং ক্যাম্পাস সংস্কৃতিও অন্যদের থেকে ভিন্ন। তাই রাকসুর প্রেক্ষাপটকে ঢাবি বা জাহাঙ্গীরনগরের নির্বাচনের সাথে এক কাতারে ফেলা সঠিক হবে না। আমরা বিশ্বাস করি, যদিও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেক সময় ‘শিবিরের ক্যান্টনমেন্ট’ বলা হয়, তবুও শিক্ষার্থীদের আস্থা ও সমর্থন নিয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেল রাকসু নির্বাচনে বিজয়ী হবে।’  জয়ের ফসল ঘরে তুলতে বৈচিত্র্যময় প্যানেলে বাজিমাত শিবিরের রাবি ক্যাম্পাসের বিষয়ে অনেকেই বলেন, এটি শিবির নিয়ন্ত্রিত বা শিবিরের ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে পরিচিত। কিন্তু শিবির এতে গা ভাসিয়ে না দিয়ে রাকসু নির্বাচনে ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ নামের একটি শক্তিশালী প্যানেল ঘোষণা করেছে। শুধু ভিপি পদে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ রয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় সংসদের বাকি ২২টি পদের অধিকাংশগুলোতেই ক্যাম্পাসে নানাকারণে জনপ্রিয়দের স্থান দেয়া হয়েছে।  এর মধ্যে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে লড়বেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা। সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে তাদের প্রার্থী ‘সোচ্চার স্টুডেন্ট নেটওয়ার্ক’ নামের একটি সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সাব্বির। প্যানেলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রী সংস্থার সভানেত্রী সাইয়্যেদা হাফসাসহ রয়েছেন তিনজন নারী।  নির্ধারিত দুই নারী পদ ছাড়াও সহসমাজসেবা সম্পাদক পদে লড়বেন একজন নারী। নির্বাহী সদস্য পদে সনাতন ধর্মাবলম্বী একজনকে রেখেছে শিবির। জুলাই আন্দোলনে এক চোখ হারানো দ্বীপ মাহবুবও প্রার্থী হয়েছেন ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে।  ছাত্রশিবির নেতারা সংগঠনের বাইরের দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষার্থীদের প্রার্থী করেছে। এ বৈচিত্র্যই তাদের প্যানেলকে ইনক্লুসিভ (অন্তর্ভুক্তিমূলক) করেছে। এটাই তাদের শক্তির জায়গা বলে তারা চাউর করছে। প্রচারণায় কৌশলী শিবির   শিবির প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ চাপা স্বভাবের হলেও মেধাবী ও কৌশলী ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিত। প্রচারণার কৌশল হিসেবে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের মাঝে আতর, মুড়িপার্টি কিংবা ছোট ছোট উপঢৌকন (যাতে আচরণবিধি লঙ্ঘন না হয়) দিচ্ছেন। এ ছাড়া শিবিরের স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের তারা বুকে টেনে নিচ্ছেন। জুলাই অভ্যত্থানে শিবির প্যানেলের প্রার্থীদের অবদানের কথা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে করিয়ে দিচ্ছেন।  পাশাপাশি ডাকসু ও রাকসুতে শিবিরের ভূমিধস বিজয়ের বিষয়টিও শিক্ষার্থীদের মাঝে আলাপ করছেন। শিবিরের প্যানেল থেকে সংস্কৃতি বিষয়ক পদে লড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পরিচত মুখ  জাহিদ হাসান জোহা। তিনি ইতোমধ্যেই গম্ভীরা গানের নানা সেজে ক্যাম্পাস মাতিয়ে তুলেছেন। কখনো কৃষক সেজে আবার কখনো বা গান গেয়ে গেয়ে ভোটার দ্বারে দ্বারে গিয়ে শিবির প্যানেলের প্যানেলের জন্য ভোট প্রার্থনা করছেন। গানের তালে তালে শিবিরের ইশতেহার গেয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। এটি শিবির প্যানেলের একটি বড় কৌশলী প্রচারণা বলে মনে করছেন অনেকেই।  শিবিরের ফ্যাক্টর নিজস্ব ও নারী ভোটার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিবিরের আধিপত্য রয়েছে এটি সবার যেমন মুখে মুখে বাস্তবেও তার কিছুটা সত্যতা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার ভোট শিবিরের নিজস্ব ভোট রয়েছে। এ ভোটগুলো শিবির প্যানেলের জ্বালেই গড়াবে বলে অনেকে বিশ্বাস করেন। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি ছাত্রী আবাসিক হলে ছাত্রীসংস্থার প্রভাব অনেক আগে থেকেই বিরাজমান। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ শতাংশ নারী ভোটের সিংহভাগ শিবির প্যানেলে পড়তে পারে বলে আশাবাদী তারা।  এ ছাড়া সাড়ে ২৯ হাজার ভোটারের মধ্যে ৪০ শতাংশ আবাসিক হলগুলোতে অবস্থান করে। বাকি ৬০ শতাংশ ভোটার ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করে। তবে যারা ক্যাম্পাসের বাইরে বিভিন্ন ছাত্রাবাস-ছাত্রীনিবাসে থাকেন তাদের সিংহভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে চতুর্দিকেই জামায়াত-শিবিরের আধিপত্য আশির দশক থেকেই অনেক বেশি। সঙ্গত কারণেই যারা জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত ছাত্রাবাস কিংবা এলাকায় থাকেন সেই ভোটগুলো শিবির প্যানেলে নিয়ে আসতে জামায়াত-শিবির আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপিপ্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘ডাকসু, জাকসু এবং রাকসু—প্রতিটি নির্বাচনের প্রেক্ষাপট আলাদা এবং সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা, নির্বাচনী ধারা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিও স্বতন্ত্র। তাই প্রতিটি নির্বাচনকে আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। তবে ডাকসু ও জাকসুতে শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রতি যে আস্থা রেখেছেন, সেটি আসলে শিক্ষার্থীদের একটি বার্তা—তারা পরিবর্তন চান। তারা সৎ, যোগ্য ও সাহসী নেতৃত্ব চান। এই জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে, আর সেই ধারাবাহিকতাই আমরা রাকসুতেও বজায় রাখতে চাই। অনেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শিবিরের ঘাটি বলে। কিন্তু আমরা এভাবে কখনো বলি না। কারণ এখানে সব মতাদর্শের শিক্ষার্থীরা থাকে। তাদের মনে আঘাত লাগতে পারে। আমরা নারী শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী সবাইকে সম্মান-শ্রদ্ধা করি। সকল মতাদর্শ একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তিনি বলেন, রাকসুতে আমরা শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও সমস্যাগুলো সরাসরি শুনে সেগুলোর সমাধানকে আমাদের ইশতেহারে রাখছি। আমরা চাই- একটি নিরাপদ, স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গন, যেখানে ভিন্নমত দমন নয় বরং অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি চর্চা হবে। ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক শক্তিকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগিয়ে ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। শেষ পর্যন্ত আমাদের লক্ষ্য একটাই শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। আমরা বিশ্বাস করি, রাকসুতেও শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর আস্থা রাখবেন।
Read Entire Article