রাজধানীতে গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। পাইপে গ্যাস না থাকায় রান্না করতে পারছেন না অনেকে। বাধ্য হয়ে সিলিন্ডার বা লাকড়ি দিয়ে রান্না করতে হচ্ছে। অনেকে আবার বৈদ্যুতিক চুলা ব্যবহার করছেন। এতে যে বাড়তি খরচ আর ঝামেলা হচ্ছে তা মধ্যবিত্তের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে গ্যাস সংকটের এমন চিত্র দেখা গেছে। টানা বেশ কিছুদিন ধরেই গ্রাহকদের এমন ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।
রাজধানীর গ্রিনরোড, মহাখালী, আজিমপুর, আদাবর, কামরাঙ্গীরচর, মৌচাক, নাজিরাবাজার, মগবাজার, ধলপুর, কাঁঠালবাগান, মিরপুর, নয়াবাজার, কল্যাণপুর, মীরবাগ, মধুবাগ, নয়াটোলা, তেজগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে গ্যাসের তীব্র সংকটের খবর পাওয়া গেছে। যেসব এলাকায় কিছুটা গ্যাস থাকে তাতে টিপটিপ করে চুলা জ্বলে। তা দিয়ে রান্না করা সম্ভব হয় না। আবার কোনো কোনো এলাকায় চুলা জ্বলেও ওঠে না।
মিরপুরের বাসিন্দা চামেলী আক্তার বলেন, দিনে গ্যাস থাকে না। আবার এলপিজি সিলিন্ডারও নাই। কী করবো! বাসার ছাদে লাকড়ি দিয়ে রান্না করছি। কয়েক সপ্তাহ ধরে একই অবস্থা চলছে। কোনো উন্নতি নেই।
যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা হুমায়রা আনজুম বলেন, গ্যাস সংকট অনেকদিনের। রান্না করতে কষ্ট হয়। আধা ঘণ্টার রান্না শেষ করতে দেড়-দুই ঘণ্টা পার হয়ে যায়। দিনে গ্যাসই থাকে না। রাতে কিছুটা আসে। তাও রান্না করার মতো অবস্থা থাকে না।
আরও পড়ুন
হাজারীবাগের বাসিন্দা নিলুফার বলেন, গ্যাস না থাকায় খুবই বিপদে আছি। রান্না নিয়ে অলাদা টেনশনে থাকতে হয়। কবে ঠিক হবে, কেউ জানে না।
পেট্রোবাংলার সূত্র বলছে, গত শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য মহেশখালীর এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনাল থেকে আরএলএনজি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে অপরটি দিয়ে দৈনিক প্রায় ৫৫০-৫৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। এতে সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া শীতকালে পাইপলাইনে গ্যাসের চাপ কম থাকায় গ্রাহক পরিমাণ মতো গ্যাস পাচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
তিতাস বলছে, চাহিদা মতো গ্যাস না পাওয়ায় তারা সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাসের অপারেশন ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ সাইদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, একটি টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণের কাজে বন্ধ থাকায় গ্যাসের সাপ্লাই কম। এজন্য সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা চাহিদার চেয়ে অনেক কম গ্যাস পাচ্ছি। আগামীকাল টার্মিনালটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে৷ তবে আরও সময় লাগতে পারে।
কবে নাগাদ সংকট কাটবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এলএনজি টার্মিনালটি চালু হলেই সংকট কেটে যাবে। সব কিছু পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে।
এর আগে ১ জানুয়ারি থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য মহেশখালীতে থাকা এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনাল থেকে মোট ৭২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল।
এনএস/এমএইচআর