রাজশাহীতে ওয়ানগালা ও লবান উৎসব উদযাপন

5 hours ago 7

রাজশাহীতে আদিবাসী গারো, সাঁওতাল, পাহাড়ি, মাহালি ও ওঁরাও সম্প্রদায়ের ‘ওয়ানগালা’ এবং ‘লবান’ উৎসব উদযাপিত হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও নতুন ফসল কাটার পর শস্য দেবতা ‘মিসি সালজং’-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ও নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতির জন্য এ উৎসব পালন করা হয়।

শনিবার (৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় নগরীর বাগানপাড়ায় উত্তম মেষপালক ক্যাথিড্রাল গির্জা প্রাঙ্গণে দেবতাদের পূজার মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়।

পরে ধর্মীয় আচার ‘আমুয়া’ ও ‘রুগালা’ পালিত হয় এবং শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। গারো শিল্পীরা নিজস্ব ভাষায় গান পরিবেশন করেন এবং ‘জুম নাচ’ পরিবেশন করেন।

আলোচনা পর্বে রাজশাহী ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশের ডিডি বিশপ জের্ভাস রোজারিও বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি বহু জাতি-ভাষা ও সংস্কৃতির দেশ। এমন উৎসব জাতিগত সম্প্রীতি রক্ষায় সহায়ক।’ তিনি বলেন, ‘ওয়ানগালা ও লবান উৎসব আমাদের একতা ও সমন্বয়কে প্রকাশ করে।’

কারিতাস বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক ড. আরোক টপ্য বলেন, ‘এটি শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, আদিবাসী সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’

বিশেষ অতিথি ছিলেন ভিকার জেনারেল ফাদার ফাবিয়ান মারান্ডা, নানকিং গ্রুপের এহসানুল হুদা, পার্লার অ্যাসোসিয়েশনের রুকসানা হুদা ও গির্জা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফ্রান্সিস সরেন। তারা উৎসবের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন।

আদিবাসীদের ভাষায়, ‘ওয়ানগালা’ ও ‘লবান’ উৎসব জুম চাষের সঙ্গে সম্পর্কিত। নতুন ফসল তোলার পর গ্রামপ্রধান (নকমা) উৎসবের তারিখ নির্ধারণ করেন। রাজশাহীতে গারোরা এক যুগের বেশি সময় ধরে এই উৎসব পালন করে আসছে। এদিন গির্জার মাঠে বহু আদিবাসী জড়ো হন, একে অপরের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেন এবং ঐতিহ্যবাহী খাবার উপভোগ করেন।

উৎসব কমিটির নকমা লোটাস চিসিম বলেন, ‘ওয়ানগালা ও লবান শুধু উৎসব নয়, এটি আমাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতি রক্ষার মাধ্যম।’ এই আয়োজন সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করে এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মধ্যে সহাবস্থানের বার্তা দেয়।

Read Entire Article