রাজশাহীতে ডেভিল হান্ট অপারেশনে সহায়তায় তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে মবের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর বারিন্দ মেডিকেল কলেজে মবের এ ঘটনা ঘটে।
এদিন রাত পৌনে ৮টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ের পাশে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেশকাত মিশু।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন বারিন্দ মেডিকেল কলেজ থেকে আমাদের কাছে বেশকিছু অভিযোগ আসে। সেখানে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাবার আশ্রয়ে বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কর্মরত রয়েছেন। চলমান ‘ডেভিল হান্ট’ অপারেশনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করতে আমরা সেখানে তথ্য সংগ্রহ করতে যাই।’
মেশকাত মিশু বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের সচিব তাজুল ইসলাম রনির সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনায় বসি। একপর্যায়ে সেখানে কর্মরত বেশ কয়েকজন অফিস স্টাফ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ঢুকে পড়েন এবং আমাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির বাইরে মব তৈরি করে আমাদের আটকে ফেলা হয়।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনাকে ইস্যু করে ইচ্ছেকৃতভাবে আমাদের চাঁদাবাজ বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়ছে। কোনো ধরনের অভিযোগ কিংবা তথ্য প্রমাণ ছাড়া যে সমস্ত ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান আমার মর্যাদাহানির উদ্দেশ্যে ডিজিটাল স্পেয়ারে অপপ্রচার চালিয়েছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়ে আরও বলেন, ‘এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছি এবং শিগগিরই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাবার মালিকানাধীন নগরীর চন্দ্রিমা থানার পদ্মা আবাসিক এলাকার বারিন্দ মেডিকেল কলেজে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের লুকিয়ে থাকার খবর পান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা।
তাদের তথ্য সংগ্রহ করতে আজ সেখানে যান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেশকাত মিশু, রাজশাহীর যুগ্ম আহ্বায়ক এমএ বারী, মুখ্য সংগঠক সোহাগ সর্দার ও রাবির সাবেক শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব। পরে সেখানে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়ান ও একপর্যায়ে লোক জড়ো করে মব সৃষ্টি করেন। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানালে তারা সেখান থেকে সমন্বয়কদের উদ্ধার করে। বিষয়টিকে ‘চাঁদাবাজি’ বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়।
এ বিষয়ে নগরীর চন্দ্রিমা থানার ওসি মোহাম্মদ মতিয়ার রহমান বলেন, ‘সমন্বয়করা কয়েকজন বারিন্দ মেডিকেল কলেজের এমডির ছেলের (শাহরিয়ার আলম) খোঁজ নিতে গিয়েছিল। তাদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয় এবং তাদের অবরুদ্ধ করা হয়। পরে আমরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করেছি। তবে সেখানে চাঁদাবাজির কোনো ঘটনার তথ্য আমরা প্রাথমিকভাবে পাইনি।’