কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌরসভায় রাতে বাড়িতে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণালংকারসহ ২২ লাখ টাকার মালামাল লুটের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দিনগত রাত সোয়া ২টার দিকে পৌরসভার শ্রীরামদী এলাকার বিএডিসি কোল্ড স্টোর সংলগ্ন একটি বাড়িতে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ডাকাতরা বাড়ির সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুট করে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন বাড়ির মালিক ইছাম উদ্দিন (৭০)। তাকে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তিনি একই গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের জানান, রাত সোয়া ২টার দিকে ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রথমে একে একে প্রতিটি ইউনিটের প্রধান দরজা ভেঙে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে একটি কক্ষে বন্দি করে তারা। এরপর প্রতিটি ঘরে ঢুকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নেয়। সেই সঙ্গে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ফেলে।
বাড়ির ভাড়াটিয়া ও স্থানীয় বিকাশ ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া বলেন, রাত ২টার পর ৪-৫ জন অস্ত্রধারী আমার ঘরে ঢুকে আমাকে জিম্মি করে। দোকানের বিকাশ ক্যাশ ব্যাগ থেকে ৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ও স্ত্রীর স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। আমার দীর্ঘদিনের সঞ্চয়, এমনকি বাড়ি কেনার দলিলপত্রও নিয়ে গেছে ডাকাতরা।
আরেক ভাড়াটিয়া জানান, দ্বিতীয় দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে আমাদের জিম্মি করে আমার স্ত্রীর সব স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়ে গেছে।
পাকুন্দিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আমির উদ্দিন বলেন, বাড়িতে তিনজন ভাড়াটিয়া থাকেন। ডাকাতরা সবার মালামাল লুট করে গেট দিয়ে বেরিয়ে কাভার্ডভ্যানে পালিয়ে যায়।
বাড়ির মালিক গুরুতর আহত ইছাম উদ্দিন বলেন, ১০-১২ জনের একটি দল অস্ত্রের মুখে আমাদের জিম্মি করে ডাকাতি করে। তারা শুধু আমার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২০-২২ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
বাড়ির মালিকের ছেলে জহিরুল ইসলাম ভাবন বলেন, আমি ঢাকায় ব্যবসায়িক কাজে আছি। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতটা খারাপ হবে ভাবতেও পারিনি। ডাকাতরা বাড়ির সবকিছু লুট করে নিয়েছে। আমি ফিরে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেব।
এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই। এরই মধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে দুর্ধর্ষ এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়দের দাবি, পুলিশি টহল জোরদার করে এমন ডাকাতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
এসকে রাসেল/এমএন/এএসএম