রাতে সুরা জিলজাল পাঠ করার ফজিলত

2 hours ago 3

সুরা জিলজাল কোরআনের ৯৯তম সুরা, মদিনায় অবতীর্ণ এ সুরাটির আয়াত সংখ্যা ৮ টি, রুকু সংখ্যা ১টি। এ সুরায় আল্লাহ কেয়ামতের বর্ণনা দিয়েছেন, মানুষের আমলের হিসাব নিকাশ কীভাবে হবে তার বর্ণনা দিয়েছেন। সুরাটি শেষ হয়েছে আল্লাহর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে যে, মানুষ অণু পরিমাণ নেক কাজ করলেও আখেরাতে দেখতে পাবে এবং তার প্রতিদান পাবে, অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করলেও তা দেখতে পাবে এবং আল্লাহ ক্ষমা না করলে শাস্তি পেতে হবে।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, সুরা জিলজাল পাঠ করার সওয়াব অর্ধেক কোরআনের সমান। সুরা ইখলাস এক-তৃতীয়াংশ কোরআনের সমান, সুরা কাফেরুন এক-চতুর্থাংশ কোরআনের সমান। (সুনানে তিরমিজি)

আরেকটি বর্ণনায় আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, কেউ রাতে সুরা জিলজাল পাঠ করলে তা তার জন্য অর্ধেক কোরআনের সমতুল্য হবে। (ইবনুস সুন্নি)

সুরা জিলজাল

বাংলা উচ্চারণ: (১) ইযা ঝুলঝিলাতিল আরদু ঝিলঝালাহা। (২) ওয়া আখরাজাতিল আরদু আসকালাহা। (৩) ওয়া কালাল ইনসানু মা লাহা। (৪) ইয়াওমাইযিন তুহাদ্দিসু আখবা রাহা। (৫) বিআন্না রাব্বাকা আওহা লাহা। (৬) ইয়াওমাইযিইঁ ইয়াসদুরুন নাসু আশতাতাল লিউউরাও আ‘মালাহুম। (৭) ফামাইঁ ইয়া‘মাল মিসকালা যাররাতিন খাইরাইঁ ইয়ারাহ। (৮) ওয়া মাইঁ ইয়া‘মাল মিসকালা যাররাতিন শাররাইঁ ইয়ারাহ।

বাংলা অর্থ: (১) যখন প্রচন্ড কম্পনে পৃথিবী প্রকম্পিত হবে। (২) যখন পৃথিবী তার বোঝা বাইরে নিক্ষেপ করবে (৩) আর মানুষ বলবে, এর কী হলো? (৪) সেদিন পৃথিবী তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে, (৫) যেহেতু তোমার রব তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। (৬) সেদিন মানুষ বিক্ষিপ্তভাবে বের হয়ে আসবে যাতে দেখানো যায় তাদেরকে তাদের নিজদের কৃতকর্ম। (৭) অতএব, কেউ অণু পরিমাণ ভালো কাজ করলে তা সে দেখবে, (৮) আর কেউ অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করলে তাও সে দেখবে।

শিক্ষা ও নির্দেশনা

১. পরকাল, হিসাব ও প্রতিদানে বিশ্বাস মুসলমানদের মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাস, পরকালে অবিশ্বাসী হয়ে কেউ মুমিন হতে পারে না। পরকালের বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে অন্তরে ধারণ করা আমাদের কর্তব্য।

২. এক প্রচণ্ড ভুমিকম্পের মাধ্যমে এই দুনিয়ার ইতি ঘটবে, আকাশ ও পৃথিবী সব সেদিন ওলটপালট হয়ে যাবে।

৩. আল্লাহর নির্দেশ দিলে জড়বস্তুও কথা বলতে পারে। এটা আল্লাহর ক্ষমতার নিদর্শন।

৪. মানুষের প্রত্যেকটি ছোটখাট নেক কাজেরও প্রতিদান দেওয়া হবে। কাউকে এক টুকরো খেজুর খাওয়ালে অথবা উত্তম কথা বললে তাও জাহান্নাম থেকে মুক্তির কারণ হতে পারে। রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা এক টুকরা খেজুর দান করে হলেও আগুন থেকে আত্মরক্ষা করো, কেউ যদি তাও না পায় তবে উত্তম কথা দিয়ে হলেও। (সহিহ বুখারি)

৫. কাফের তার ভালো কাজের প্রতিদান দুনিয়ার জীবনে পেয়ে যাবে। মুমিনের মন্দ কাজের শাস্তি দুনিয়ার জীবনেই দেওয়া হবে আর তার নেক আমলের প্রতিদান সে পাবে আখেরাতে।

ওএফএফ

Read Entire Article