রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন— ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্য কোটা ফিরিয়ে নে, পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন, ২৪-এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার, জামাই কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন, আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ, অবৈধ সিন্ডিকেট ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও ইত্যাদি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আসন্ন রাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের স্বার্থে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবি তুলেছেন এবং তা প্রশাসনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করিয়েছেন। তাদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিগত সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও আসন্ন রাকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, পোষ্য কোটার মাধ্যমে রাবিকে একসময় পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ সংগ্রামের পর আমরা রাকসু নির্বাচন ফিরে পাচ্ছি। অথচ সেটিকেই জিম্মি করে পুরোনো পোষ্য কোটাকে নতুন মোড়কে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। শিক্ষার্থীরা থাকতে এ কোটা আর ফিরতে পারবে না। ২৫ তারিখ আমরা রাকসু চাই, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার নামে অন্যায় কোটা নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, পোষ্য কোটা একটি মীমাংসিত ইস্যু থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন নতুন করে তা চালু করেছে। ঠিক রাকসু নির্বাচনের আগে এমন সিদ্ধান্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দ্বন্দ্বের মধ্যে ফেলছে। আমরা মনে করি, রাকসু বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এ কোটা আনা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেবে না।
এর আগে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তিন দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। দাবি পূরণ না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভর্তি কমিটির বৈঠকে শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্নাতক প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানরা কেবল এ সুবিধা পাবেন। তবে তারা নিজ বিভাগে ভর্তি হতে পারবেন না এবং আবাসিক সুবিধাও পাবেন না।
রাবির উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, কিছু শর্তে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এটি শুধুমাত্র এ বছরের জন্য কার্যকর থাকবে। আগামী বছর ভর্তি কমিটি নতুন করে সিদ্ধান্ত নেবে।