রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ করবে ভারত?

1 month ago 7

মার্কিন ট্যারিফের ধাক্কা সামলাতে ভারত হয়তো খুব সন্তর্পণে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কে ধীরে ধীরে রাশ টানতে পারে। কোনো কোনো পর্যবেক্ষক এমন সম্ভাবনার কথাও বলছেন। গত তিন-চার বছরের মধ্যে রাশিয়া ভারতের জন্য প্রধান ক্রুড (অপরিশোধিত তেল) সরবরাহকারী দেশ হয়ে উঠেছে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের ওপর যে তথাকথিত ‘রাশিয়া পেনাল্টি’ চাপিয়েছেন, তারও ঘোষিত কারণ এটাই।

পাশাপাশি একথাও ঠিক, শুধু ভারতই নয় চীন ও তুরস্কও রাশিয়ার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ তেল কিনে থাকে। ওই দুই দেশের ওপর কিন্তু ভারতের মতো কোনো ‘রাশিয়া পেনাল্টি’ চাপানো হয়নি।

লন্ডনের সুপরিচিত থিংকট্যাংক চ্যাথাম হাউজের ড: চিতিজ বাজপাই-এর মতে, ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ক ইতিমধ্যেই একটা ‘ম্যানেজড ডিক্লাইন’ বা ‘নিয়ন্ত্রিত অবনমনে’র দিকে যাচ্ছে এবং শীতল যুদ্ধের (কোল্ড ওয়ার) সময় এই সম্পর্কের যে স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব ছিল, সেটাও আর নেই।

তিনি বিবিসিকে বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন এভাবে চাপ প্রয়োগ করার অনেক আগে থেকেই ভারত কিন্তু প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম (মিলিটারি হার্ডওয়ার) কেনার ক্ষেত্রে রাশিয়ার ওপর তাদের যে নির্ভরশীলতা সেটা কমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

পাশাপাশি ভারতের অয়েল ইমপোর্ট (তেল আমদানি) বাস্কেটেও রাশিয়ার পাশাপাশি অন্যান্য দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে, কাজেই রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের যেরকম সম্পর্ক থাকুক বলে আমেরিকা চাইছে, সেদিকে কিছু ছাড় হয়তো দেওয়া হতে পারে।

ভারতের একটি শীর্ষ বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ নীলকান্ত মিশ্রও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, তিন বছর আগেও রাশিয়া থেকে ক্রুড কিনে ভারত যে প্রতি ব্যারেলে প্রায় ২৫-৩০ ডলার সাশ্রয় করতে পারতো, সেটাই এখন মাত্র তিন-চার ডলারে নেমে এসেছে।

ফলে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা কমিয়ে দিলে বা বন্ধ করলেও ভারতের খুব একটা অর্থনৈতিক ক্ষতি হওয়ার কথা নয়।

এদিকে এরই মধ্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করা এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার টেলিফোনে বিশদ আলোচনা হয়েছে এবং ভারত-রাশিয়ার ‘বিশেষ সম্পর্ক’ ও ‘প্রিভিলেজড স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ’ অক্ষুণ্ণ রাখতে দুপক্ষই তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন যে এ বছরই আরও পরের দিকে ভারত সফরে আসছেন, সেটাও নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ফলে ভারত ও রাশিয়ার বিশেষ সম্পর্কে যে কোনও চিড় ধরছে না, নরেন্দ্র মোদীর পোস্টে সেই বার্তাই দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে খুব স্পষ্টভাবে।

টিটিএন

Read Entire Article