যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক কূটনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা থেকে সরে এসে নীরব দর্শকের ভূমিকা নিচ্ছেন, এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে একাধিক ঘটনা ও পর্যবেক্ষণ।
গত আগস্টে পেন্টাগনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও এস্টোনিয়াসহ ইউরোপীয় কূটনীতিকদের সতর্ক করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এসব ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রের জন্য কিছু নিরাপত্তা সহায়তা বাতিল করতে চায়।
পেন্টাগনের কর্মকর্তা ডেভিড বেকার আরও বলেন, ইউরোপকে এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর কম নির্ভর করতে হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্রাধিকার এখন মার্কিন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা।
এই মন্তব্য ইউরোপীয় কূটনীতিকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে—বিশেষ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাহস পেতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হয়।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এই আশঙ্কা কিছুটা সত্যি হয়ে দেখা দিলো।
এস্তোনিয়া জানায়, রাশিয়ার মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান তাদের আকাশসীমা ১০ মিনিটের জন্য লঙ্ঘন করে, পরে ইতালির এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান তা তাড়িয়ে দেয়।
রাশিয়া অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, তাদের যুদ্ধবিমান নিরপেক্ষ জলসীমার ওপর দিয়ে উড়েছে।
একই দিনে রাশিয়ার জেট বিমান পোল্যান্ডের একটি তেল প্ল্যাটফর্মের ওপর দিয়ে ঘুরে যায় বলে দাবি করে ওয়ারশো। তার আগের সপ্তাহেই রুশ ড্রোন ভূপাতিত করা হয় পোল্যান্ডে।
এইসব ঘটনায় এখনো পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া ছিল অনেকটাই নীরব।
এস্তোনিয়ার ঘটনায় ট্রাম্প ঘণ্টা কয়েক পরে বলেন, এটা বড় সমস্যার দিকে যেতে পারে।
আর পোল্যান্ডের ড্রোন ঘটনার পর তিনি শুধু লিখেন, হেয়ার উই গো! যা অনেকে ব্যঙ্গাত্মক বা অস্পষ্ট প্রতিক্রিয়া বলে মনে করছেন।
গত কয়েক মাস ধরেই ট্রাম্প বৈশ্বিক সংকট সমাধানে বেশ কিছু প্রস্তাব ও উদ্যোগের কথা বলেছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, তিনি সেসব থেকে এক প্রকার সরে এসেছেন এবং মিত্র দেশগুলোকেই নেতৃত্বে এগিয়ে যেতে বলছেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কেবল দূর থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ।
বর্তমানে ট্রাম্পের মনোযোগ চলে গেছে দেশীয় রাজনীতিতে, যেখানে তিনি অপরাধ দমন, তথাকথিত বামপন্থি চরমপন্থার মোকাবিলা, এবং ভিসা প্রোগ্রাম সংস্কারের ওপর জোর দিচ্ছেন।
সূত্র: রয়টার্স
এমএসএম