রাশিয়ার হুমকি ঠেকাতে দূরপাল্লার অস্ত্র কিনছে ডেনমার্ক

5 hours ago 5

রাশিয়ার হুমকি ঠেকাতে দূরপাল্লার অস্ত্র কিনছে ডেনমার্ক। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মেত্তে ফ্রেডেরিকসেন জানিয়েছেন, প্রথমবারের মতো তারা দীর্ঘ-পাল্লার ও উচ্চ-নির্ভুল অস্ত্র সংগ্রহ করতে যাচ্ছে, যা মূলত রাশিয়াকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে। খবর আল জাজিরার।

সাম্প্রতিক সময়ে রোমানিয়ার আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করে রাশিয়ার ড্রোন। এরপর থেকেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো। বেশিরভাগ দেশই নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আরও বেশি কৌশলী হওয়ার চেষ্টা করছে। ডেনমার্কও সেই ধারাবাহিকতা থেকেই দূরপাল্লার অস্ত্র কিনছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী মেত্তে ফ্রেডেরিকসেন স্পষ্ট করে বলেন, রাশিয়া আগামী কয়েক বছর ধরে ডেনমার্কের জন্য হুমকি হয়ে থাকবে, যদিও তাৎক্ষণিক কোনো হামলার আশঙ্কা নেই।

তিনি বলেন, এই অস্ত্রগুলো দিয়ে সেনাবাহিনী দূরপাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারবে এবং শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হবে। ফ্রেডেরিকসেন একে ডেনমার্কের প্রতিরক্ষা নীতিতে একটি প্যারাডাইম শিফট বা মৌলিক পরিবর্তন হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী ট্রোলস লুন্ড পউলসেন জানান, সরকার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, তবে সুনির্দিষ্টভাবে কোন অস্ত্র কেনা হবে তা জানাননি।

গত সপ্তাহেই ডেনমার্ক ইউরোপের তৈরি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনায় তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ক্রয় সম্পন্ন করেছে, যার পরিমাণ ৫৮ বিলিয়ন ডেনিশ ক্রোন (৯.২ বিলিয়ন ডলার)। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে দুই বছরের মধ্যে আরও ৫০ বিলিয়ন ক্রোন (৭.৯ বিলিয়ন ডলার) ব্যয়ে সামরিক ব্যয় বাড়ানোর ঘোষণা দেন-যা কয়েক দশকের কাটছাঁটের পর এক নাটকীয় সিদ্ধান্ত।

তবে দীর্ঘ-পাল্লার অস্ত্র কিনতে কত খরচ হবে তা বুধবার পর্যন্ত পরিষ্কার হয়নি। রাশিয়া ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডেরিকসেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার ইচ্ছার বিরুদ্ধেও দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। গত মাসে ডেনমার্কে নিযুক্ত মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করা হয়। সে সময় একটি পাবলিক ব্রডকাস্টার রিপোর্ট প্রকাশ করে যে, তিনজন মার্কিনি গোপনে গ্রিনল্যান্ডের জনগণের মতামত ডেনমার্কের বিপক্ষে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

তখন ফ্রেডেরিকসেন বলেন, ডেনমার্কের রাজ্য ও গ্রিনল্যান্ডের গণতন্ত্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যে কোনো হস্তক্ষেপ অগ্রহণযোগ্য। তিনি আরও জানান, আমেরিকানরা এখনো এই রিপোর্টকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেনি।

পিইউআরএল থেকে বিলিয়ন ডলার যাচ্ছে ইউক্রেনে
এদিকে ইউক্রেন নতুন অস্ত্র সহায়তার একটি বড় অংশ পেতে চলেছে ন্যাটোর প্রায়োরিটি ইউক্রেন রিকোয়ারমেন্টস লিস্ট (পিইউআরএল) উদ্যোগের মাধ্যমে। এই ব্যবস্থার অধীনে ন্যাটো দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি অস্ত্র ও প্রযুক্তি ইউক্রেনে পাঠানোর জন্য অর্থায়ন করতে পারবে।

বুধবার প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেন অক্টোবরের মধ্যে এই উদ্যোগ থেকে প্রায় ৩.৫ থেকে ৩.৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তা পাবে, যার মধ্যে পশ্চিমা বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকবে প্রথম দিকের অস্ত্র হিসেবে।

এই সহায়তা এমন সময়ে আসছে যখন রাশিয়া দক্ষিণ ইউক্রেনে হামলা অব্যাহত রেখেছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে জাপোরিঝঝিয়ায় রুশ হামলায় অন্তত একজন নিহত ও ১৮ জন আহত হয়। মিকোলাইভ অঞ্চলে আরও একজন নিহত হন এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে দুইজন আহত হন।

জেলেনস্কির ভাষ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে মাসজুড়ে রাশিয়া ইউক্রেনে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ড্রোন ও প্রায় ১৯০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। তবুও তিনি আত্মবিশ্বাসী। এক্সে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, রাশিয়া সাম্প্রতিক লড়াইয়ে এত বেশি জনবল হারিয়েছে যে, তাদের বড় ধরনের আক্রমণের মতো শক্তি আর অবশিষ্ট নেই।

টিটিএন

Read Entire Article