রিশাদ গেম চেঞ্জার, হৃদয় কি আরও একবার সুযোগ পাবেন?

5 hours ago 4

হংকংয়ের বিপক্ষে প্রথম খেলায় জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য বাংলাদেশ একাদশ সাজিয়ে দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। তার প্রস্তাবিত ফরমেশন ঠিকই ছিল। আশরাফুল বলেছিলেন ৬ স্পেশালিস্ট ব্যাটারের সাথে ৩ জেনুইন পেসার ও দুজন স্পেশালিষ্ট স্পিনার নিয়ে নামবে বাংলাদেশ।

বাস্তবেও ৬ ব্যাটার (তানজিদ তামিম, পারভেজ ইমন, লিটন দাস, সাইফ হাসান, জাকের আলী অনিক, শামীম পাটোয়ারী) দুই স্পেশালিষ্ট স্পিনার (শেখ মেহেদী ও রিশাদ হোসেন) এবং তিন পেসার (তাসকিন, মোস্তাফিজুর রহমান এবং তানজিম সাকিব) দিয়ে সাজানো হয়েছে টিম বাংলাদেশ একাদশ।

তবে প্রতিপক্ষ যেহেতু হংকং, তাই পরের দুই ম্যাচে তুলনামুলক শক্তিশালী ও কঠিন প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলার জন্য তাসকিনকে প্রথম দিন বিশ্রামে রাখার পরামর্শ ছিল আশরাফুলের। পাশাপাশি তাওহিদ হৃদয়ের পরিবর্তে সাইফ হাসানকে খেলানোর পরামর্শও ছিল দেশের ক্রিকেটের সব সময়ের সবচেয়ে বড় ন্যাচারাল ট্যালেন্টেড ব্যাটার আশরাফুলের। শেষের দুটি প্রেসক্রিপশনের কোনটাই মেলেনি। টিম ম্যানেজমেন্ট তাসকিনকে বিশ্রাম দেননি। খেলিয়েছেন। আর সাইফ নয়, চার নম্বরে খেলানো হয়েছে তাওহিদ হৃদয়কে।

তাসকিন যথারীতি ভাল বোলিং করে ৩৮ রানে ২ উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন। আর হৃদয় খেলেছেন অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস। শুনে মনে হচ্ছে ভালোই তো। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ৩৫’তো ভাল রান। কিন্তু যখনই শুনবেন এবারের এশিয়া কাপের সবচেয়ে দুর্বল দল হংকংয়ের বিপক্ষে ওই ৩৫ করতে তাওহিদ হৃদয় খেলেছেন ৩৬ বল, তখন অতিবড় হৃদয় ভক্তেরও মুখ বন্ধ হয়ে যাবে।

শুধু স্ট্রাইক কম বলেই নয়। হৃদয়ের ব্যাট চালানো, বিগ হিট নিতে না পারাও ভক্তদের চোখ এড়ায়নি। হৃদয়ের ব্যাটিং দেখে খুশি হয়েছেন, এমন একজন সাপোর্টারও খুঁজে পাওয়া কঠিন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে অধিনায়ক লিটন দাসের সাথে তাওহিদ হৃদয়ের স্লথ ও অসুন্দর ব্যাটিংটা শুধু দেখতেই খারাপ লাগেনি, ম্যাচের দৃশ্যপট, প্রেক্ষাপট আর পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায়ও ছিল অকার্যর। নেতিবাচক।

প্রথমতঃ টার্গেট (১৪৪) কম ছিল আর অপর পাশে অধিনায়ক লিটন দাস ১৫১.২৮ স্ট্রাইকরেটে খেলেছেন বলেই বোঝা যায়নি। শুধু বাংলাদেশের টার্গেটটা আর ২০ রান বেশি হলেই হৃদয়ের ওই ৯৭.২২ স্ট্রাইকরেটের ইনিংসটা দল ডোবানোর জন্য ছিল যথেষ্ঠ।

কাজেই প্রশ্ন উঠেছে, আজকেও কি তাওহিদ হৃদয়ই চারে খেলবেন? তার পরিবর্তে সাইফকে কি বিবেচনায় আনা হবে না? জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও দীর্ঘ সময় বাংলাদশ টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত খালেদ মাহমুদ সুজন মনে করেন, ‘সাইফের তুলনায় তাওহিদ হৃদয় অনেক বেশি ম্যাচ খেলেছে। তাই হৃদয়ের ইন্টারন্যাশনাল এক্সপেরিয়েন্স বেশি। হয়ত এশিয়া কাপের মত বড় আসরের প্রথম ম্যাচে টিম ম্যানেজমেন্ট ওই অভিজ্ঞ পারফরমারের দিকেই ঝুঁকেছে বলেই হয়ত প্রথম দিন হৃদয়কে খেলানো হয়েছে। তবে সাইফও খারাপ চয়েজ না। হি ইজ অ্যা ভেরি গুড চয়েজ; কিন্তু টিম এখনও মনে করেনি হয়ত। তবে এতে আমি খুব দোষের কিছু দেখি না। সাইফ ইজ অ্যা ভেরি গুড বোলার অলসো।’

‘বাট তাওহিদ হৃদয়ও ভাল প্লেয়ার। তারও ভাল খেলার সামর্থ্য আছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তাওহিদ হৃদয়কে হয়ত আরও একটি সুযোগ দিতে চাইবে টিম ম্যানেজমেন্ট।’

অন্যদিকে লেগস্পিনার রিশাদও সুবিধা করতে পারেননি। তার জায়গায় বাঁ-হাতি নাসুম থাকলে কি ভাল হতো? খালেদ মাহমুদ সুজনের ব্যাখ্যা, ‘আমার মনে হয় এখন সবাই বাঁ-হাতি স্পিনারদের ভাল খেলে। আর সেখানে লেগস্পিনার অলওয়েজ গেম চেঞ্জার। আমার মনে হয় রিশাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখা উচিৎ। ও আমাদের ভাইটাল ব্রেক থ্রু উপহার দিতে পারে। ম্যাচও বদলে দিতে পারে। নাসুমও প্রুভেন বোলার। তবে ফ্ল্যাট উইকেটে রিশাদকে এগিয়ে রাখবো। কারণ একজন বাঁ-হাতির চেয়ে লেগস্পিনারে ভেরিয়েশন সব সময় বেশি থাকে। তাই নাসুমের চেয়ে রিশাদের কার্যকরিতা ও সফল হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। তাই আজ শনিবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একাদশে পরিবর্তনের সম্ভাবনাও কম।’

এআরবি/আইএইচএস

Read Entire Article