নির্বাচনী সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) শুনানিকালে সৃষ্ট হট্টগোলের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার সমর্থকরা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা।
রোববার (২৪ আগস্ট) বিকেলে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন। বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানার অনুসারীরা সরাইলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, এনসিপির কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) মো. আতাউল্লাহর বিরুদ্ধে রুমিন ফারহানার উপর হামলার অভিযোগ এনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শাহবাজপুর প্রথমগেইট এলাকায় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপির সমর্থকরা। এ সময় তারা আতাউল্লার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
অন্যদিকে, ইসিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহর ওপর বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার সমর্থকদের হামলার অভিযোগে রোববার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, রুমিন ফারহানা ও তার সহযোগীরা গণতন্ত্রের নামে সন্ত্রাসী কায়দায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছে। নির্বাচন কমিশনের শুনানিস্থলকে রণক্ষেত্রে পরিণত করে তারা প্রমাণ করেছে। জনগণের রায়ের ওপর তাদের আস্থা নেই।
বক্তারা আরও বলেন, অখণ্ড বিজয়নগর রক্ষা ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর ন্যায্য দাবি। এ দাবি কোনো দলীয় স্বার্থ নয়, বরং জনস্বার্থ। তাই এ দাবির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সকল অপচেষ্টা রুখে দেওয়া হবে। এই ফ্যাসিবাদী আচরণ চাই না। আমরা চাই, এটি সুষ্ঠু নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন হোক। কোনো উচ্ছৃঙ্খল দলকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না। বিএনপি যে পথে হাঁটছে নির্বাচন কমিশনও তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে তাদের কথায় কথা বলছে। আমাদের মনে হচ্ছে নব্য ফ্যাসিস্টদের ক্ষমতায় বসানোর পাঁয়তারা চলছে। তাই আগামী নির্বাচন এই কমিশনের মাধ্যমে সুষ্ঠু হবে বলে মনে করি না। আমরা মনে করি এই নির্বাচনকে না সাজিয়ে সামনের দিকে নির্বাচনের দিকে এদিকে যাওয়া হবে আরেকটি ফ্যাসিস্ট তৈরি করা। সংস্কার হতে হবে, বিচার হতে হবে, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করার দাবি জানান। অন্যথায় এদেশের মানুষ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।
ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে রোববার দুপুর ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুটি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ শুনানি শুরু হয়। জেলার বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ)-এর সঙ্গে যুক্ত করার খসড়া করেছে নির্বাচন কমিশন। এই ইউনিয়নগুলো হলো বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর।
শুনানিতে নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন রুমিন ফারহানা। এর বিপক্ষে যুক্তি দেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ। তিনি ওই তিন ইউনিয়নকে বিজয়নগর উপজেলাতেই দেখতে চান বলে মত দেন। এরই একপর্যায়ে দুই পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং জড়িয়ে পড়ে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতিতে।