নানা ঘটনা-দুর্ঘটনার বছর ২০২৪। বছরের শুরুতেই বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা দখল তারপর গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার ভারতে পলায়নের মতো ঘটনার সাক্ষী এই বছর। তারপর সামরিক শাসন জারি কিংবা আওয়ামী লীগ আরও ভয়ংকর হয়ে ফিরে আসার মতো ভুল তথ্য ছড়িয়েছে দেশজুড়ে।
বলা হচ্ছে, গেল বছর দেশজুড়ে এ ধরনের ভুল তথ্যের প্রবাহ রেকর্ড ছুয়েছে। ভুয়া তথ্য শনাক্তকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে মোট দুই হাজার ৯১৯টি ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছে, যা গেল বছরের তুলনায় ৫২ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালে দেশে এক হাজার ৯১৫টি ভুল তথ্যের প্রবাহ শনাক্ত করা হয়।
রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদনে বলা হয়, গেল বছর ফেসবুকে দুই হাজার ৩৩০টি ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে। একক প্লাটফর্ম হিসেবে ফেসবুকের পর বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে ইউটিউবে যার সংখ্যা ৫৬৫টি, টিকটকের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ৫০৯টি। ২০২৪ সালে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স-এ (সাবেক টুইটার) শনাক্ত করা ভুল তথ্যের সংখ্যা ছিল ২০১টি।
গেল বছর দেশের গণমাধ্যমগুলোতে প্রচারিত ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে ১৫১টি। এ সময় রাজনৈতিক বিষয়ে ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে ৭২৭টি, যার মধ্যে আগস্টে সর্বোচ্চ ৩৮৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত করা হয়। দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিয়ে সর্বোচ্চ ৪৪টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়, বিএনপিকে নিয়ে ২৬টি এবং জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ৮২টি ভুল তথ্য ছড়ানো হয়। এ ছাড়া শেখ হাসিনাকে নিয়ে গেল এক বছরে ২০৮টি, খালেদা জিয়াকে নিয়ে ২৯টি এবং জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানকে নিয়ে ১১টি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়।
বহুল আলোচিত কোটা সংস্কার আন্দোলন সম্পর্কিত ১৮৯টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে জড়িয়ে ২৪টি এবং এর নেতাদের নিয়ে ৮৩টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদকে জড়িয়ে আটটি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেওয়া অন্তবর্তী সরকারকে নিয়ে গেল বছর ১৩৫টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে নিয়ে ছড়িয়েছে ১১০টি ভুল তথ্য।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১২ আগস্ট থেকে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ১৩টি ভুয়া খবর প্রচার করেছে ভারতের ৪৯টি গণমাধ্যম। গেল বছর ধর্মভিত্তিক ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে ৩১৩টি।