দেশের রেস্তোরাঁর খাবারের বিলের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। একই সঙ্গে রেস্তোরাঁ ব্যবসায় ভ্যাট না বাড়িয়ে আওতা বাড়ানোরও পরামর্শ দিয়েছে এই সমিতি।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে সংগঠনের বক্তারা এ দাবি জানান। এতে মূল বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।
বক্তারা বলেন, বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান মর্ডর ইন্টেলিজেন্স এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ এ বাংলাদেশের রেস্তোরাঁ শিল্পের সাইজ ৩.৭৯ বি ডলার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এর তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে রেস্তোরাঁ রয়েছে ৪ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি। এর মধ্যে রেস্তোরাঁ সমিতির সদস্য সংখ্যা ৬০ হাজার। এই সেক্টরে কর্মরত রয়েছেন ৩০ লাখ শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২ কোটি মানুষ এই সেক্টরের ওপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আমাদের দীর্ঘদিনের আলোচনা ও প্রচেষ্টার পর ধাপে ধাপে ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ ভ্যাটের বদলে বর্তমানে ৫ শতাংশ সার্বজনীন ভ্যাট আরোপের পরও ২০২২-২০২৩ এ ভ্যাট আহরণ ১৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। বিগত অর্থ বছরে ভ্যাটের হার কমানোর ফলে ভ্যাট আদায় ১৯ শতাংশ বেড়েছে যা এন.বি. আর চেয়ারম্যান বলেছে। আমরা ভ্যাট ৩% নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছিলাম, যাতে করে মানুষের ভ্যাট দেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায় ও সরকারের ভ্যাট আদায় আরো বাড়ে।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমানে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেস্তোরাঁ ব্যবসার ওপর ৫ শতাংশ থেকে বর্ধিত ভ্যাট ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে এবং সম্পূরক শুল্ক (এসডি) নামে পূর্বে আরও একটি ১০ শতাংশ করের বোঝা সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদি বর্ধিত ভ্যাট ১৫ শতাংশ ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ১০ শতাংশ করা হয় তবে সাধারণ ভোক্তাকে মোট ২৫ শতাংশ কর দিতে হবে। এ অবস্থায় ভোক্তার কাছ থেকে কোনোভাবেই এই ২৫ শতাংশ বাড়তি কর আদায় করা সম্ভব হবে না।
বক্তারা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বহুবার সরকারকে জানিয়েছি যে সরকারের একার পক্ষে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তাই রেস্তোরাঁ খাতের সবাইকে একটি কমপ্লায়েন্স এর আওতাভুক্ত করে, নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রেস্তোরাঁ সেক্টরে কর্মরত ৩০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রেনিং, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরিতে সরকারি কার্যকর উদ্যোগের প্রয়োজন।
অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ লোক খাওয়া দাওয়ার বিষয়ে রেস্তোরাঁর ওপর নির্ভর করবে উল্লেখ করে তারা বলেন, রেস্তোরাঁ সেক্টরে কর্মসংস্থান তৈরি হবে, দেশের জিডিবিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে এই সেক্টর। সুতরাং রেস্তোরাঁ সেক্টরের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা সোনার বাংলা গড়তে ঐক্যবদ্ধ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি ওসমান গনি, প্রথম যুগ্ম মহাসচিব ফিরোজ আলম সুমন কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমানসহ কয়েকশ মালিক ও কর্মীরা।
এএএম/এমআইএইচএস/জিকেএস