জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রাহিব রেজার মৃত্যুর ঘটনায় প্রমাণিত হওয়ায় তিন চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন সাময়িক বাতিল করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)। মঙ্গলবার (১ জুলাই) এ সংক্রান্ত পৃথক নোটিশ জারি করা হয়।
রেজিস্ট্রেশন সাময়িক বাতিল হওয়া তিন চিকিৎসক হলেন মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, সুনান বিন ইসলাম ও নাসিফ শাহরিয়ার ইসলাম। এর মধ্যে স্বপ্নীলের পাঁচ বছর ও অন্য দুজনের ছয় মাসের জন্য রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মেডিকেল চিকিৎসক হিসেবে কোনো অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা অথবা নিজেকে মেডিকেল চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞাটি ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে।
২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ল্যাবএইডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাহিব রেজার (২১) মৃত্যু হয়। অস্ত্রোপচার দলের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের অবহেলায় মৃত্যু হয় রাহিব রেজার। ওই বছরের ২৩ অক্টোবর হাইকোর্টে দাখিল করা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। পাঁচ সদস্যের ওই তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. গোলাম কিবরিয়া।
ওই কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে রোগীকে অ্যানেস্থেশিয়া দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া অ্যানডোস্কোপি করা হয়েছে অদক্ষ লোক দিয়ে। এমনকি জটিলতা দেখা দিলেও রোগীকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিতে ৮৫ মিনিট সময় ক্ষেপণ করা হয়। এতে তার অবস্থা খারাপ হয় এবং এক পর্যায়ে রাহিব রেজা মারা যান।
- আরও পড়ুন
এন্ডোসকপি করাতে গিয়ে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ - এন্ডোসকপি করাতে গিয়ে রাহিবের মৃত্যুতে ডা. স্বপ্নীলের অবহেলা ছিল
- চিকিৎসায় অবহেলা: ডা. স্বপ্নীলের নিবন্ধন বাতিলের নির্দেশ
এ ঘটনায় বিএমডিসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডা. মামুন আল মাহতাবের বিরুদ্ধে রোগী রাহিব রেজার চিকিৎসাকার্যে আনীত অভিযোগের দায় প্রমাণিত হওয়ায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ এর ধারা ২৩ (১) এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল প্রবিধানমালা ২০২২ এর বিধান ৩৬(৪)(খ) অনুযায়ী বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্টার থেকে তাদের নাম প্রত্যাহারপূর্বক প্রদত্ত রেজিস্ট্রেশন পাঁচ বছরের জন্য সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে।
ওই আইনের ধারা ২২(১) অনুযায়ী এই সময়ে তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মেডিকেল চিকিৎসক হিসেবে কোনো অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা অথবা নিজেকে মেডিকেল চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় প্রদান করতে পারবে না। নিষেধাজ্ঞাটি ১ জুলাই তারিখ থেকে কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
একইভাবে ডা. সুনান বিন ইসলাম ও ডা. নাসিফ শাহরিয়ার ইসলামের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের রেজিস্ট্রেশন ছয় মাসের জন্য সাময়িক বাতিল করা হয়েছে।
এসইউজে/এমএমএআর/জেআইএম