সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান পান্নার জামিন শুনানিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন সময় টিভির সাংবাদিক আসিফ হোসাইন সিয়াম। এজলাসে থাকা কয়েকজন আইনজীবী তাকে এলোপাথারি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ পিয়াসের আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সাংবাদিক সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত হয় দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটের দিকে, যখন সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান পান্নাকে আদালতের ৩০ নম্বর এজলাসে তোলা হয়। এ সময় আরেক সাংবাদিক মোক্তাদির রশীদ তার কাছে জানতে চান, কারাগারে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে কিনা। এ সময় এজলাসের বেঞ্চে বসে থাকা অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন মাহি আসামির সঙ্গে কথা বলার কারণ জিজ্ঞাসা করেন রশীদকে। বিষয়টা নিয়ে কিছুটা তর্ক-বিতর্ক হয় তাদের। এ সময় তাকে আদালত থেকে বের হয়ে যেতে বলেন অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন।
পরে রশীদ ওই আইনজীবীর কাছে জানতে চান, আপনি কোর্ট ইন্সপেক্টর কিনা? আমাকে বেরিয়ে যেতে বলছেন। বিচারক বললে আমি বেরিয়ে যাব। এরই মধ্যে বিচারক এজলাসে ওঠেন। শাহবাগ থানার একটা মামলার শুনানি শুরু হয়।
এ সময় একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা সময় টিভির রিপোর্টার সিয়াম এসে ওই আইনজীবীকে বলেন, উনি বহিরাগত না, একজন সাংবাদিক। একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে বেঞ্চ থেকে লাফ দিয়ে উঠে সিয়ামের কানের ওপর ঘুসি মারেন ওই আইনজীবী। এ সময় সিয়াম তার হাতে থাকা সময় টিভির মাইক্রোফোন উঠিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। তবে আইনজীবী তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে আসেন। সিয়াম কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার কয়েকজন সহযোগীসহ তাকে ঘিরে মারধর শুরু করেন। এতে গুরুতর আহত হন সিয়াম।
এ সময় আদালত কক্ষে এমন পরিস্থিতি দেখে এজলাস থেকে নেমে খাসকামড়ায় চলে যান বিচারক। পরে প্রসিকিউশনের পক্ষে থাকা কাইয়ুম হোসেন নয়ন ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে তাকে সাক্ষীর কাঠগড়ার কাছে নিয়ে যান।
এর আগে, গত ২৮ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির একটি প্রোগ্রাম থেকে লতিফ সিদ্দিকী, মঞ্জুরুল আহসান পান্না, ঢাবি শিক্ষক হাফিজুর রহমান কার্জনসহ ১৬ জনকে আটক করা হয়। পরদিন শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধ আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আজ (বৃহস্পতিবার) লতিফ সিদ্দিকী এবং সাংবাদিক পান্নার জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। এদিন লতিফ সিদ্দিকীকে আদালতে হাজির করা না হলেও সাংবাদিক পান্নাকে আদালতে হাজির করা হয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সিয়াম বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই বিচারকের সামনে মব সৃষ্টি আমাকে মারধর করলো কয়েকজন আইনজীবী। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ ঘটনার পর বিকেল ৩ টা ২৫ মিনিটের আবার এজলাসে আসেন বিচারক। এরপর শুনানি নিয়ে আদালত লতিফ সিদ্দিকী এবং সাংবাদিক পান্নার জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।
এমআইএন/কেএইচকে/জেআইএম