ময়মনসিংহে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। তবে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে কাঁচামরিচের। কাঁচামরিচ গত সপ্তাহে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো সবজির দাম কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
অস্বস্তি শুধু সবজিতে নয়, মাছের দামও কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজারে লাগামহীন দামের কারণে ক্ষুব্ধ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে শহরের ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজারে গিয়ে এ তথ্য জানা যায়।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, এক লাফে টমেটো, চিচিঙ্গা ও বরবটির দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। গত সপ্তাহে টমেটো ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও দাম বেড়ে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিচিঙ্গা ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ ও বরবটি ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙে, চিকন বেগুন, পটোল ও কাকরোলের দাম কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন ৮০, ৫০ টাকার ঝিঙে ৮০, একই দামে বেগুন, ৪০ টাকার পটোল ৭০ এবং ৫০ টাকার কাকরোল ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ধুন্দল, শসা ও লাউয়ের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। ধুন্দল ও শসা ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশি গাজর, চায়না গাজর, করলা ও কাঁচা পেপের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। দেশি গাজর ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০, চায়না গাজর ১৩০ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০, করলা ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ ও কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মোটা বেগুন ১১০, লতা ৪০, কচুর মুখি ৪০, লাউ ৬০ টাকা পিস, কাঁচা কলা ৪০ টাকা হালি ও লেবু ১৫ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
একই বাজারে মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহে কালবাউশ ৩০০-৩৬০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও দাম বেড়ে ৩১০-৩৭০, রুই ৩০০-৪০০, শোল ৫৭০-৮৫০, ট্যাংরা ৫১০-৮৩০, তেলাপিয়া ১৯০-২৭০, কাতলা ৩৩০-৩৯০, শিং ৩১০-৬০০, পাবদা ৩৫০-৪৭০, সিলভার কার্প ২২০-২৭০, মৃগেল ২৬০-৩১০, পাঙাশ ১৮০-২২০, গুলশা ৫৬০-১০০০, টাকি ৪০০-৫৫০ এবং কৈ ২৩০-৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
- আরও পড়ুন:
দামে হাঁসফাঁস, ক্রেতার নাভিশ্বাস
মুরগি, ডিম, গরু ও খাসির মাংসের দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন ১৬০, কক মুরগি ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩১০, গরুর মাংস ৭৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০০ এবং খাসির মাংসের দাম ১১০০ টাকা থেকে বেড়ে ১১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। অপরিবর্তিত অবস্থায় দেশি মুরগির ডিম ও হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা হালি।
সবজি কেনার সময় কথা হয় নাঈমুর রহমান নামের একজন ক্রেতার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে ছাতা নিয়ে সবজি কিনতে এসেছি। অন্যান্য দিনের তুলনায় বৃষ্টির কারণে ক্রেতার সংখ্যা খুব কম। তবে বাজারে সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। তারপরও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন ক্রেতারা।’
আব্দুল হক নামের আরেকজন ক্রেতা বলেন, ‘চার কেজি মুরগি কেনার উদ্দেশ্য দোকানে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি মুরগির দামও বাড়ানো হয়েছে। কী আর করার! দুই কেজি মুরগি কিনে মাছ কিনতে এসেছি। মাছের দামও বাড়তি।’
সবজি বিক্রেতা আজিজ মিয়া বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে অনেক নিচু জমিতে পানি জমেছে। এসব জমিতে থাকা সবজি পচে নষ্ট হচ্ছে। অনেক সবজি কৃষক তুলে বিক্রি করতে পারছেন না। এতে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে দাম বেড়েছে।’
মাছ বিক্রেতা আব্দুল হেকিম বলেন, বাজারে প্রচুর মাছ দেখা গেলেও চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। আড়তদাররা বাড়তি দামে বিক্রি করছেন। ফলে ক্রেতাদের কাছে কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
মুরগি বিক্রেতা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘পাইকারিভাবে মুরগি বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। এজন্য আমরাও একটু বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য।’
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, বাজারে অভিযান চালানোর সময় দাম কমে যায়। অথচ অভিযানের পর অসাধু বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেন। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কামরুজ্জামান মিন্টু/এসআর/জেআইএম