লালমাটিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে সংঘর্ষ ও দখলচেষ্টার অভিযোগ

রাজধানীর লালমাটিয়ায় অবস্থিত এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে মালিকানা বিরোধ, অনিয়ম ও দখলচেষ্টাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয়ের লালমাটিয়া শাখায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান। আখতারুজ্জামান বলেন, সাবেক প্রিন্সিপাল আনিসুর রহমান সোহাগের নির্দেশে একদল বাহিনী সকালে স্কুলে হামলা চালায়, এতে শিক্ষক–কর্মচারীরা লাঞ্ছিত ও আহত হন। এ সময় স্কুলে পরীক্ষা চলছিল। তিনি বলেন, ‘ছোট ছোট বাচ্চারা এমন ঘটনা জীবনে কখনো দেখেনি। অভিভাবকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, স্কুলে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।’ এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান জানান, ২০১৫ সালে তিনি প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর ‘পিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’ বন্ধ হওয়ার পর সেখানকার কিছু শিক্ষার্থী তার প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয়। এরপর থেকে লালমাটিয়া, মিরপুর ও উত্তরায়— এ তিনটি শাখা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সোহাগকে প্রিন্সিপালের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয় বলে জানান মো. আখতারুজ্জামান। তিনি অভিযোগ ক

লালমাটিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে সংঘর্ষ ও দখলচেষ্টার অভিযোগ

রাজধানীর লালমাটিয়ায় অবস্থিত এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে মালিকানা বিরোধ, অনিয়ম ও দখলচেষ্টাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয়ের লালমাটিয়া শাখায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান।

আখতারুজ্জামান বলেন, সাবেক প্রিন্সিপাল আনিসুর রহমান সোহাগের নির্দেশে একদল বাহিনী সকালে স্কুলে হামলা চালায়, এতে শিক্ষক–কর্মচারীরা লাঞ্ছিত ও আহত হন। এ সময় স্কুলে পরীক্ষা চলছিল।

তিনি বলেন, ‘ছোট ছোট বাচ্চারা এমন ঘটনা জীবনে কখনো দেখেনি। অভিভাবকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, স্কুলে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।’

এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান জানান, ২০১৫ সালে তিনি প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর ‘পিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’ বন্ধ হওয়ার পর সেখানকার কিছু শিক্ষার্থী তার প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয়। এরপর থেকে লালমাটিয়া, মিরপুর ও উত্তরায়— এ তিনটি শাখা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সোহাগকে প্রিন্সিপালের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয় বলে জানান মো. আখতারুজ্জামান। তিনি অভিযোগ করেন সোহাগের জমা দেওয়া শিক্ষাগত সনদ ‘জাল’, যা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) অবৈধ ঘোষণা করে। পরে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডও তাকে অপসারণের নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানে আনিসুর রহমান সোহাগের ৪২ জন আত্মীয় কর্মরত, যারা বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত বলেও দাবি করেন চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সোহাগ নয় মাস ধরে স্কুলে না এলেও প্রিন্সিপাল পরিচয়ে বেতন নিয়েছেন। সিগনেটরি জটিলতার কারণে বেতন বন্ধ করা যায়নি বলে তিনি দাবি করেন।

আখতারুজ্জামান জানান, ১৩ অক্টোবর মালিকানা ও পরিচালনাসংক্রান্ত দ্বন্দ্ব মেটাতে একটি আরবিট্রেশন বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুক্তার আহমেদসহ সদস্যরা আড়াই মাস তদন্ত চালান। সমাধান চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর আগমুহূর্তে ‘দুষ্টুচক্র পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে হামলা চালায়’—দাবি তার।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সোহাগ মূল প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন না। তৎকালীন রাজনৈতিক চাপেই তাকে বিনা পুঁজিতে প্রতিষ্ঠানে নিতে হয়েছিল। এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, বরিশালের ঝালকাঠির একজন আওয়ামী লীগ নেতার চাপেই সোহাগকে যুক্ত করা হয়েছিল।

সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলায় ঘটনায় জড়িত সব কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হবে। একই সঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজ প্রশাসনের কাছে দেওয়া হবে। তার পাশাপাশি জানুয়ারি মাস থেকে দুইটি স্কুলবাস চালু করা হবে। তাছাড়া স্থায়ী ক্যাম্পাসের কাজ শুরু হবে।

মালিকপক্ষ ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা নেবে না বলে তিনি জানান। এক প্রশ্নের জবাবে এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চেয়ারম্যান অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমার রক্তের বিনিময়েও বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো।’

অপর আরেক প্রশ্নের জবাবে আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী হত্যা মামলার আসামি গোলাম মোস্তফাকে স্কুলের সামনে থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মোস্তফার লোকজন জড়ো হয়েছে, পুলিশকে মারধর করে এবং আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করলে সেই মামলায় এক নম্বর এজাহারনামীয় আসামি আনিসুর রহমান সোহাগ।

কেআর/এমএএইচ/

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow