লেবু বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়, সমাদৃত ফল। দেশের সর্বত্রই লেবু চাষ হয়। যে কোনো অনুষ্ঠানে বা খাওয়া-দাওয়ায় লেবু না হলে চলে না। বাড়ির চিলেকোঠা, ছাদে, ঘরের বারান্দায়, আঙিনায় বা উঠানে চাষ করতে পারেন। মে থেকে অক্টোবর (জ্যৈষ্ঠ-কার্তিক) লেবু চাষের উপযুক্ত সময়।
মাটির প্রকারভেদে ৪-৬টি চাষ ও মই দিতে হবে। প্রথম চাষ গভীর হওয়া দরকার। এতে সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধাজনক। পরিচর্যা এবং সেচের পানির অপচয় কম হয়। সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। লাইন থেকে লাইন ৯৮-১১৮ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ৯৮-১১৮ ইঞ্চি দূরে লাগাতে হবে। জাতভেদে শতক প্রতি ৫-৭টি।
সার সমান ৩ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তি বর্ষার শুরুতে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ), দ্বিতীয় কিস্তি মধ্য ভাদ্র থেকে মধ্য কার্তিক (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) এবং তৃতীয় কিস্তি মাঘ-ফাল্গুন (ফেব্রুয়ারি)। পাহাড়ি এলাকায় অথবা পর্যাপ্ত জায়গা না থাকলে শাবল দিয়ে গর্ত করে সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।
একটি পূর্ণবয়স্ক গাছের গোড়া থেকে সোয়া ২ হাত থেকে সোয়া ৩ হাত দূর থেকে শুরু করে ৭.৫ হাত পর্যন্ত সার প্রয়োগ করতে হবে। গাছে সার প্রয়োগের পর এবং খরার সময় বিশেষ করে ফলের গুটি আসার সময় সেচ দিন।
আরও পড়ুন
লটকন চাষে সফল টাঙ্গাইলের স্কুলশিক্ষক শামছুল
পাহাড়ের লটকনে লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন
তাছাড়া গোড়ার আগাছা পরিষ্কার ও মাটি ঢেলা ভেঙে দিন। মাটির উর্বরতাভেদে সারের মাত্রা কম-বেশি করুন। লেবু গাছের জন্য বোরণ ও ম্যাগনেশিয়াম সারও দরকার।
বালাইনাশক বা কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন। নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোশাক পরিধান করবেন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে, তা লক্ষ্য রাখুন।
জমি পর্যবেক্ষণ করুন। সেচ ও সার দেওয়ার পর জো আসা মাত্র নিড়িয়ে আগাছা বাছাই করবেন। খরা মৌসুমে ২-৩ বার সেচ প্রয়োগ করবেন। জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না বিধায় বর্ষাকালে গোড়ায় পানি জমতে দেবেন না। বীজ সারিতে বুনুন। যাতে জমিতে সেচে নালা তৈরি করে রাখতে পারেন। বাত্তি ফল তুলে ফেলুন। ঝরনা দিয়ে গাছের গোড়ায় সেচ দিন। মালচিংয়ের ব্যবস্থা নেবেন।
জাতভেদে শতক প্রতি ফলন পাবেন ৪০-৯০ কেজি। ফসল তুলে ছায়ায় সংরক্ষণ করবেন। বেশিদিন সাধারণ তাপে রাখা যায় না।
এসইউ/