শত্রুদের আঘাত করতে কারও অনুমতির প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। রোববার (২৬ অক্টোবর) এক বৈঠকে তিনি বলেন, গাজা বা লেবাননে হামলার ক্ষেত্রে তার দেশ কারও অনুমতির অপেক্ষা করবে না।
রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি বলেন, ইসরায়েল একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। আমরা নিজেদের উপায়ে নিজেদের রক্ষা করবো ও নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই নির্ধারণ করবো।
নেতানিয়াহু আরও বলেন, নিজেদের রক্ষা করার জন্য আমরা কারও অনুমতি চাই না। আমাদের নিরাপত্তা আমরা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করি।
তার এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি আরও দৃঢ় করতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা একের পর এক ইসরায়েল সফর শেষ করেছেন।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বলেছিল, ইসরায়েল ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। রোববার (১৯ অক্টোবর) ইসরায়েলি হামলায় ৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের মতে, ইসরায়েল এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
একজন হোয়াইট হাউজ কর্মকর্তা পলিটিকোকে বলেন, যা প্রকাশ্যে বলা হচ্ছে, সেটিই প্রেসিডেন্টের প্রকৃত অনুভূতি প্রকাশ করে। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও পশ্চিম তীর সংযুক্তিকরণ সংক্রান্ত ইসরায়েলি সংসদের নতুন বিলের সমালোচনা করেছেন।
বিশ্লেষকরা এটিকে ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের ইসরায়েলপন্থি নীতির সঙ্গে অস্বাভাবিক দূরত্ব বলে আখ্যা দিচ্ছেন।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছি ইসরায়েল। পশ্চিম তীরে ধরপাকড় অভিযানও চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটির বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি তৃতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করলেও উপত্যকায় এখনো থামেনি ইসরায়েলি আগ্রাসন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, গাজার মধ্যাঞ্চলের নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত এবং অন্তত চারজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আল-আওয়াদা হাসপাতাল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের এই হামলার লক্ষ্য ছিল ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন ইসলামিক জিহাদের এক সদস্য।
এদিকে, ধ্বংসস্তূপে ফেরা ফিলিস্তিনিদের জন্য পরিস্থিতি দিন দিন আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) গাজা শহরে একটি ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ধসে নয় বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রোববার সকালে থেকেই গাজার পূর্বাঞ্চলজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইসরায়েলি বাহিনী আবারও ভারী বিস্ফোরক ব্যবহার করছে।
পূর্ব দেইর আল-বালাহ ও আল-জুয়াইদা এলাকাসহ একাধিক স্থানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, যা ইসরায়েলি সেনাদের ঘোষিত প্রত্যাহার সীমারেখারও বাইরে।
নুসেইরাতের সাম্প্রতিক হামলার পর স্থানীয়রা আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তারা বলছেন, যুদ্ধবিরতি থাকলেও যে কোনো সময় আকাশ থেকে হামলা হতে পারে। অনেকের মতে, ‘এখনো কোনো নিরাপত্তা নেই।’
সূত্র: আল-জাজিরা
এসএএইচ

4 hours ago
5









English (US) ·