ফিট থাকতে হলে নিয়মিত শরীরচর্চার বিকল্প নেই। হাঁটা, জগিং, জিম — সবই শরীর ও মন ভালো রাখে। তবে সব কিছুর মতো ব্যায়ামও ঠিকমতো না করলে উল্টো ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
জেনে নিনে কোন কোন পরিস্থিতিতে শরীরচর্চা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে-
১. অতিরিক্ত ব্যায়াম
অনেকেই দ্রুত ফল পেতে দিনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে কাটিয়ে দেন। এতে শরীরের বিশ্রাম হয় না। এর ফলে ‘ওভারট্রেনিং সিনড্রোম’ হতে পারে। তখন ক্লান্তি, পেশিতে ব্যথা, মন খারাপ কিংবা ঘনঘন অসুস্থ হয়ে পড়া দেখা দেয়।
২.ভুল কৌশল ও ভারি ওজন
শরীরচর্চার সময় ভুল ভঙ্গি বা অতিরিক্ত ভারি ওজন তোলার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। এতে পিঠ, হাঁটু বা কাঁধে আঘাত লাগার ঝুঁকি বাড়ে। বাংলাদেশে জিমে আসা অনেকের ক্ষেত্রেই এই ধরনের ইনজুরি দেখা যায়। তাই শুরুতে বিশেষজ্ঞ ট্রেনারের তত্ত্বাবধানে ব্যায়াম শেখা জরুরি।
৩. বেশি গরমে ও পানিরশূন্য শরীরে
অনেক বেশি গরম ও আর্দ্র পরিবেশে শরীরচর্চা করলে বা পর্যাপ্ত পানি না খেলে পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা কিডনির জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে বলা হয় ‘র্যাবডোমায়োলাইসিস’। তাই ব্যায়ামের আগে ও পরে পর্যাপ্ত পানি খাওয়া অপরিহার্য।
৪. ঘুম ও পুষ্টির ঘাটতি
খালি পেটে বা ঘুম কম নিয়ে ব্যায়াম করলে অনেক সময় মাথা ঘোরা, দুর্বল লাগা বা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যেমন হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ, থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শরীরচর্চা শুরু করতে হবে।
নিরাপদ ব্যায়ামের টিপস
>> শরীরচর্চার দুটি সেশনের মাঝে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
>> হঠাৎ করে নয়, ধীরে ধীরে ব্যায়ামের সময় ও চাপ বাড়ান।
>> নতুন কোনো ব্যায়াম শুরুর আগে বিশেষজ্ঞের কাছে সঠিক কৌশল শিখে নিন।
>> ব্যায়ামের আগে ও পরে পানি পান ও হালকা খাবার খেতে ভুলবেন না।
>> দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।
নিয়মিত ব্যায়াম অবশ্যই দরকার, তবে নিজের শরীরের সীমাবদ্ধতা ও ক্ষমতা বোঝা আরও জরুরি। সচেতনভাবে করলে শরীরচর্চা হবে সুস্থতার চাবিকাঠি, আর অবহেলায় তা হয়ে উঠতে পারে বিপদের কারণ।
সূত্র: প্লাস ওয়ান জার্নাল, হেলথ ডটকম, মায়ো ক্লিনিক
এএমপি/জেআইএম