আইন পাসের প্রায় দুই বছর পরও মাঠপর্যায়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাই কালক্ষেপণ না করে দ্রুত এই বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন চান জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন ফোরাম আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এ দাবি জানান তারা। এতে সভাপতিত্ব করেন আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার ও শিক্ষাবিদ ড. মোশাররফ হোসেন মাসুদ।
তিনি বলেন, উর্বর কিন্তু অবহেলিত শরীয়তপুরে কৃষি গবেষণা ও উন্নত শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয় ২০২১ সালে। এরপর সংসদে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২৩’ পাস হলেও কার্যক্রম শুরু হয়নি। এমনকি ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে নাম পরিবর্তন করে ‘শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ রাখা হলেও বাস্তবায়নে অগ্রগতি নেই।
ফোরামের সদস্য সচিব ও শিল্পপতি শিকদার মো. মেসবাহউদ্দিন বলেন, পদ্মাপাড়ের এই কৃষিনির্ভর অঞ্চলের মানুষের বহুদিনের স্বপ্নের নাম এই বিশ্ববিদ্যালয়। দ্রুত কার্যক্রম শুরুর দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, আইন পাসের পরও একটিও প্রশাসনিক পদ সৃষ্টি না হওয়া জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে বড় অসম্মান।
মোটেক্স ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ কবির রানা বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি উন্নয়নে দ্বিতীয় কোনো বিকল্প নেই। তথ্যনির্ভর প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।
মোটেক্স ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ কবির রানা বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ তুলনামূলকভাবে অবহেলিত। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মাত্র একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের নবম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। আর কোনো কালক্ষেপণ যেন না হয়।
তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের জটিলতা নিরসনে আমাদের তথ্যভিত্তিক উপায়ে কাজ করতে হবে। যাতে করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বাস্তবতা যৌক্তিকভাবে তুলে ধরতে পারি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আহসানউল্লাহ বলেন, শরীয়তপুর জেলার নাম শুনলেই মনে হয় প্রদীপের নিচে অন্ধকার। ঢাকার এত কাছের জেলা কিন্তু অবহেলিত, নিগৃহীত জনপদ। আমার বিশ্বাস শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন হলে জেলার নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। পলিমাটির উর্বর জেলায় কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।
ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি গ্লোবাল নেশনের সম্পাদক ও প্রকাশক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, কৃষিপ্রধান জনপদ শরীয়তপুর। জেলার নামে আইন পাস হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টি দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। তাহলে নতুন নতুন গবেষণায় সমৃদ্ধ হবে জেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে সারাদেশের মানুষ।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন, পালং-জাজিরা ফোরামের সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, ধলপুর আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ বাচ্চু, অধ্যাপক এমএ শাহাবুদ্দিন, তরুণ ব্যবসায়ী ও শিক্ষানুরাগী সাইয়েদ জোবায়ের, ঢাকাস্থ শরীয়তপুর স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ারের সাবেক সভাপতি তাহমিদ জামান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত জাজিরার শিক্ষার্থীদের সংগঠন পদ্মার সভাপতি রফিকুল ইসলাম।
এএএম/বিএ/এমএস