শরীয়তপুরে ডাকাতির ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ৪, গণপিটুনিতে নিহত ২

3 hours ago 3
শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে নদীতে বাল্কহেডে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতদের গুলিতে ৪ জন আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে স্থানীয়দের গণপিটুনিতে দুই ডাকাত নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ তিন শ্রমিক ও গুরুতর আহত পাঁচ ডাকাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় মাদারীপুরে কালকিনি ও রাত ১১টার দিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেতুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একদল সংঘবদ্ধ ডাকাত মাদারীপুরের কালকিনির রাজারচর এলাকায় একটি বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া দেয়। তখন ডাকাতরা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। গুলিতে বাল্কহেডের শ্রমিক পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার মাসুম মিয়া (৩০) ও পিরোজপুরের কালিকাঠির আল-আমিন ফকির (১৯) গুলিবিদ্ধ হন। পরে ডাকাতরা পালিয়ে শরীয়তপুরের আঙ্গারিয়ার ভাষানচর এলাকায় ঢুকে পড়ে। এরই মধ্যে ডাকাতির খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা সতর্ক হয়ে যান। ওইখানেও বাল্কহেডের শ্রমিকরা বাধা প্রদান করে। পরে ডাকাতরা আবার কীর্তিনাশা নদী দিয়ে পালানোর সময় রাজগঞ্জ এলাকা দিয়ে নদী পথে বের হওয়ার চেষ্টা করে। তবে স্থানীয়রা বাল্কহেড দিয়ে ডোমসার এলাকার তেতুলিয়া গ্রামের নদীপথ আটকে দেয়। বাধা পেয়ে ডাকাতরা স্পিডবোট তীরে রেখে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতা তাদের ধাওয়া করে। এ সময় ডাকাতরা হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এবং এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এ সময় ডাকাতদের গুলিতে বাল্কহেডের শ্রমিক ডোমসার মোল্লা কান্দি এলাকার তোতা মিয়া (৩৫) ও স্থানীয় একজন আহত হন। পরে স্থানীয়রা মুন্সিগঞ্জ কালীরচর থানার রিপন (৪০), শরীয়তপুরের জাজিরার কুন্ডেরচরের আনোয়ার দেওয়ান (৫০), মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুরের সজিব (৩০), অজ্ঞাত আরও চারজনসহ ৭ জন ডাকাত ধরে গণপিটুনি দেয় এবং পুলিশে সোপর্দ করে। আহত ডাকাতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মধ্যে দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসক পরে গুলিবিদ্ধ তিন শ্রমিকসহ ৫ ডাকাতের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে ঢাকায় প্রেরণ করেন। হামলার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী গুলিবিদ্ধ আল-আমিন ফকির বলেন, হঠাৎ দেখি ডাকাতরা স্পিডবোট নিয়ে আসছে। কোনো কথা বলার আগেই তারা এলোপাতাড়ি গুলি করে। গুলি আমার শরীরে লাগে। এরপর কি হয় তা আমি বলতে পারবো না। জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি হাসপাতালে। এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মুনতাসির খান কালবেলাকে বলেন, ডাকাতের ছোড়া গুলিতে ৪ জনকে আহত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। এদের মধ্যে দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও আহত অবস্থায় ৭ ডাকাতকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। এদের মধ্যে দুইজন মারা গিয়েছেন। বাকিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলার পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ডাকাতির চেষ্টাকালে ৭ জনকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থেকে তাদের উদ্ধারের পর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও স্পিডবোট জব্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Read Entire Article