শরৎ মানেই শুভ্র মেঘ আর পরিষ্কার আকাশ। তবে মাঝে মাঝে দেখা যায় হঠাৎ কালো মেঘের আনাগোনা, সঙ্গে অঝোর বৃষ্টি। অনেকেই এই মৌসুমের বৃষ্টিতে ভিজতে ভালোবাসেন। কিন্তু মন ভেজানো এই ভিজে যাওয়া কি শরীরে অসুখ ডেকে আনে?
আমাদের দেশে প্রচলিত ধারণা হলো—বৃষ্টিতে ভিজলেই ঠান্ডা লাগবে, জ্বর আসবে কিংবা সর্দি-কাশি হবে। বিষয়টি কতটা সত্য?
আসলে বৃষ্টিতে ভিজে অসুখ হওয়ার মূল কারণ বৃষ্টি নয়। বৃষ্টির পানিতে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া থাকে না যে তা সরাসরি রোগ ছড়াবে। তবে সমস্যাটা হয় অন্য জায়গায়। ভিজে গেলে শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়, ভেজা কাপড় দীর্ঘক্ষণ গায়ে থাকলে শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন সর্দি-কাশি, জ্বর বা গলা ব্যথার মতো ভাইরাস সহজেই আক্রমণ করতে পারে।
শরৎকালে আবহাওয়া একটু পরিবর্তনশীল হয়, কখনো গরম, কখনো হালকা ঠান্ডা। এ সময়ে অনেকে অ্যালার্জি, হাঁপানি বা সাইনাসের সমস্যায় ভোগেন। আবার বৃষ্টির পানিতে রাস্তার ধুলো-ময়লা মিশে থাকে, যা ত্বক ও পেটের অসুখের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। ফলে বৃষ্টিতে ভিজে যদি শরীরের যত্ন না নেওয়া হয়, তাহলে অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভিজেই যদি দ্রুত শুকনো কাপড় পরে নেওয়া যায়, গরম পানি দিয়ে গোসল করা যায় আর গরম চা বা স্যুপ খাওয়া যায়, তাহলে রোগ হওয়ার আশঙ্কা অনেকটা কমে আসে। যাদের শ্বাসকষ্ট বা অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাদের অবশ্যই একটু বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে।
অতএব, শরতের বৃষ্টিতে ভিজলেই যে অসুখ হবে, এমন নয়। বরং ভিজে যাওয়ার পর শরীরকে শুকনো ও উষ্ণ রাখা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া এবং সঠিক খাবার খাওয়াই হলো সুস্থ থাকার উপায়। তাই পরের বার বৃষ্টি নামলে মন চাইলে ভিজুন, তবে ভিজে যাওয়ার পর একটু বাড়তি যত্ন নিতে ভুলবেন না।
সূত্র: হেলথলাইন, হেলথ ডটকম, মায়ো ক্লিনিক নিউজ নেটওয়ার্ক, পাবমেড
এএমপি/এএসএম