আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের বাবার নামে পরিচালিত শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের নাম পরিবর্তন করে আগের মতো মওলানা ভাসানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নামকরণ করার দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যের শিকার শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রীরা।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ফ্যাসিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস চাই শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের পরিচালক (প্রশাসন) কেএম গোলাম মাওলা লিখিত বক্তব্যে বলেন, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের নাম তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তন করে জাতীয় নেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নামে করা হয়েছিল।
যাতে করে কোনো পরিবারের প্রতিষ্ঠানটিকে জিম্মি না হয়ে এটি জনগণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হয়। সেজন্য ডা. মো. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস এটিকে ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপদানের জন্য মওলানা ভাসানী ট্রাস্ট গঠন করে মেডিকেল কলেজ এবং নার্সিং ইনস্টিটিউট ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠান হিসেবে একীভূত করেন।
যা ট্রাস্ট হিসেবে রেজিস্ট্রার জয়েন স্টোক থেকে যথাযথভাবে ২০০৪ সালে রেজিস্ট্রি করা হয় এবং ট্রাস্টিদের ট্রাস্ট রেজিস্ট্রেশন সাবরেজিস্ট্রি অফিসেও দালিলিকভাবে রেজিস্ট্রার করা হয়। কিন্তু ২০০৯ সালে ফ্যাসিবাদী সরকার গঠিত হলে মোহাম্মদ নাসিমের পরিবার তথা তার স্ত্রী লায়লা আরজুমান্দ, তার সন্তান তমাল মনসুর, তার আর এক সন্তান সাবেক সংসদ সদস্য তানভির শাকিল জয়সহ অন্যান্য পারিবারিক সদস্যদের অস্ত্রের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মওলানা ভাসানী ট্রাস্টের সদস্যদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন।
পরে জাতীয় এ প্রতিষ্ঠানকে গ্রাস করে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানিয়ে শত শত কোটি টাকা লোপাট করে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া করে ফেলে।
তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরে এই কলেজে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললে অবৈধভাবে সহস্রাধিক শিক্ষক, চিকিৎসক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে চাকরি থেকে বিতাড়িত করা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাডেমিকসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। বর্তমানে ফ্যাসিস্টদের নিয়োগ করা কর্মকর্তারাও একইভাবে সবার বিরুদ্ধে ন্যক্কারজনক হুমকি, হামলা এবং মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে প্রতিবাদের কণ্ঠরোধে ব্যস্ত রয়েছেন। এ সময় বর্তমান প্রশাসনে নিয়োজিত তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক বিচারেরও দাবি জানান গোলাম মাওলা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. মাহবুবুল ইসলাম খন্দকার, প্রফেসর ডা. দীনা হুসেইন, ডা. ফারহানা শাওন, ডা. ইমরান, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।