শাপলা কলিতেই ‘থিতু হচ্ছে’ এনসিপি, ভোটে ‘একলা চলোর’ ইঙ্গিত

12 hours ago 10

প্রতীক হিসেবে শাপলা নিয়ে অনড় অবস্থানের মধ্যে শেষমেশ শাপলা কলি নিতে রাজি হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। একই সঙ্গে শাপলা কলি প্রতীক নিয়ে ৩০০ আসনে ভোটের কথা জানিয়েছেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

তবে নির্বাচনে বিএনপি বা জামায়াতের জোটসঙ্গী না হয়ে নিজ দলের প্রতীকে অংশ নেওয়ার কথা ভাবছে দলটি। রোববার (২ নভেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে নির্বাচন ভবনে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

তিনি বলেন, আগামীতে ধানের শীষ এবং শাপলা কলির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। আমরা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবো। বিএনপির সঙ্গে জোট যেমন হবে না, জামায়াতের সঙ্গেও জোট করবো না। বরং বিএনপি-জামায়াত যেখানে রয়েছে সেখানে এনসিপি থাকবে লড়াইয়ে।

জোটে না যাওয়ার ব্যাখ্যা তুলে ধরে এনসিপির এ নেতা বলেন, বিএনপি-জামায়াত যে বড় দলগুলো রয়েছে, সেখানে শাপলা কলি বড় ফাইটিং জোনে থাকবে। জামায়াতে ইসলামীর যে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ, এই ফ্যাসিবাদের তো আমরা সঙ্গী হতে পারবো না। আবার বিএনপির যে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস- এটারও সঙ্গী হতে পারবো না।

দলের প্রতীকের বিষয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আমরা শাপলা কলি নিচ্ছি। এনসিপি ও পুরো দেশের মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছি, যে যেখানে প্রার্থী হতে চান ইলেকশনের প্রস্তুতি নিন। আমাদের অফিসে আসুন, প্রার্থিতা জমা দিন। আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবো।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে এনসিপি ২২ জুন নিবন্ধন আবেদনের সময় শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন প্রতীকের পছন্দক্রম দিয়েছিল। ৩ অগাস্ট আরেক চিঠিতে দলটি পছন্দক্রম সংশোধন করে দেয় শাপলা, সাদা শাপলা ও লাল শাপলা। এরপর দলটি শাপলা পেতে মরিয়া হলেও ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিধিমালায় না থাকায় প্রতীকটি দেওয়া যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন
শেষমেশ শাপলা কলিতেই রাজি এনসিপি 
ধানের শীষ-শাপলা কলির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী 
৩০০ আসন ধরে এগোচ্ছি, প্রার্থী তালিকা এ মাসেই দিতে পারি: নাহিদ 

পরে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন করে ২৪ সেপ্টেম্বর প্রতীক সংখ্যা বাড়িয়ে ১১৫টি করা হয়। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর এনসিপিকে ইসি জানায়, এক সপ্তাহের মধ্যে তালিকা থেকে প্রতীক পছন্দ করে জানাতে হবে। তবে তাতে সাড়া না নিয়ে শাপলা প্রতীক পেতে অনড় অবস্থানে থাকে দলটি।

পরবর্তীতে ১৯ অক্টোবরের মধ্যে পছন্দের প্রতীক না জানালে ইসি নিজ উদ্যোগে মার্কা দেবে বলে জানায়। এমন পরিস্থিতিতে এনসিপি ফের জানায়, শাপলাই দিতে হবে এবং বিধিমালা সংশোধনের দাবি জানায় দলটি। কমিশনও জানায়, তালিকায় না থাকায় শাপলা দেওয়ার সুযোগ নেই।

পরস্পর অনড় অবস্থানের মধ্যে প্রতীক তালিকায় সংযোজন-বিয়োজন করে গত ৩০ অক্টোবর হঠাৎ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন করা হয়। এতে ১৬টি প্রতীক বাদ দেওয়া হয় আগের তালিকা থেকে। এছাড়া শাপলা কলিসহ ২০টি নতুন প্রতীক যুক্ত করা হয়। এখন সংসদ নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী ও স্বতন্ত্রদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীক ১১৯টি।

আজ রোববার এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, আমরা আজ দরখাস্ত জমা দিয়েছি। বর্তমানে আমাদের মার্কার পছন্দক্রম হচ্ছে শাপলা, সাদা শাপলা আর শাপলা কলি। আশা করি ইসি আমাদের নিবন্ধন বিষয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির সময় আজকের দরখাস্ত থেকেই মার্কা বিবেচনা করবে।

এসময় দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, স্বাধীন ইসি প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ছি আমরা। প্রতীক তালিকায় অযাচিত কিছু প্রতীক ছিল। এরই মধ্যে বেগুন, খাট, কলাসহ কিছু প্রতীক বাদ দিয়েছে, নতুন কিছু প্রতীক যুক্ত করেছে। এরমধ্যে শাপলা কলি প্রতীক রয়েছে। এনসিপির কাঙ্ক্ষিত প্রতীক তালিকায় শাপলা কলি রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, অন্য কোনো দল যদি আবার এটা (শাপলা কলি) নিয়ে আবেদন করে, সেজন্য আমরা আবেদনের মধ্যে (শাপলা কলি প্রতীক) রেখেছি আজ।

অনেক আগে আবেদন করেও সমাধান করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইসি ধীর গতিতে কাজ করছে। আমরা ইলেকশনের ফেজে যেতে চাই, নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। দেশবাসীর মধ্যে শাপলা কলিতে সাড়া পেয়েছি। ইসি শাপলা কলি রাখায় এটাকে আমরা ইতিবাচকভাবে নিয়েছি।

এমওএস/কেএসআর

Read Entire Article