গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার বিস্তীর্ণ বিলজুড়ে যেন লালিমার উৎসব। ভোরের নরম সূর্যালোক পানির গায়ে পড়তেই ফুটে ওঠে অসংখ্য লাল শাপলা। মুহূর্তেই বদলে যায় পুরো বিলের চেহারা। মনে হয়, যেন প্রকৃতি নিজের হাতে সাজিয়েছে লাল কারুকাজের গালিচা।
প্রতিদিনই এ অপূর্ব দৃশ্য দেখতে ছুটে আসছেন বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ। কেউ হাতে ক্যামেরা, কেউবা নৌকায় চেপে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিলের বুকজুড়ে। শাপলার আসল সৌন্দর্য দেখা যায় ভোরের আলোয়। কারণ দুপুর নাগাদ ফুলগুলো বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, গোপালগঞ্জে অন্তত ২৫টি বিল বর্তমানে লাল শাপলায় ভরে গেছে। বর্ষা শেষে জমে থাকা পানিতে প্রাকৃতিক ভাবেই জন্ম নেয় এ ফুল। কেউ এগুলো রোপণ করেন না—প্রকৃতি নিজেই এ উপহার দেয়।

গোপালগঞ্জের উল্লেখযোগ্য বিলগুলো হলো—বলাকইর বিল, টুঙ্গিপাড়ার জোয়ারিয়ার বিল, কোটালীপাড়ার সাতলা ও কান্দি বিল, চরগোপালপুর বিল, গোপালগঞ্জ সদরের রঘুনাথপুর বিল এবং ধারাবাশাইল বিল প্রভৃতি।
আরও পড়ুন
ঘোড়া চালানো শিখতে পারবেন ঢাকার ৩০০ ফিটে
বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির অলংকার
ঢাকা, খুলনা, ফরিদপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে প্রতিদিন বহু মানুষ আসেন পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে। শাপলার লালিমায় ভেসে বেড়ানোই এখন তাদের আনন্দের অন্যতম উৎস।

রাজশাহী থেকে ঘুরতে আসা তিতুমীর নামের এক পর্যটক বলেন, ‘রাতেই গোপালগঞ্জে এসেছিলাম। সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিলে যাই। তখন দেখলাম একসঙ্গে হাজার হাজার শাপলা ফুটছে—অবিশ্বাস্য সুন্দর দৃশ্য। মনে হলো, প্রকৃতি যেন নতুন রঙে নিজেকে সাজিয়েছে।’
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘শাপলার বিলগুলো ঘিরে পর্যটন সুযোগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। দর্শনার্থীদের জন্য আরও সুবিধা নিশ্চিত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।’
তবে এ সৌন্দর্য বেশিদিন টেকে না। শুষ্ক মৌসুমে যখন পানি নেমে যায়; তখন কৃষকেরা ফের চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তাই প্রকৃতির এ রূপ দেখতে চাইলে এখনই সময়।
এসইউ/এমএস

12 hours ago
8









English (US) ·