বলিউডে শাহরুখ খানের যত বিখ্যাত সংলাপ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম ‘ক-ক-ক-কিরণ’। ১৯৯৩ সালে যশ চোপড়া পরিচালিত সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ‘ডর’ সিনেমায় এই সংলাপ দিয়ে দর্শক মাতিয়েছিলেন তিনি। সে সিনেমায় রাহুল চরিত্রে তার ভিন্নধর্মী অভিনয় আজও মনে রেখেছেন দর্শক।
তবে জানেন কি, কীভাবে তৈরি হয়েছিল সেই সংলাপটি?
নেটফ্লিক্সের প্রামাণ্যচিত্র ‘দ্য রোমান্টিকস’-এ শাহরুখ জানিয়েছেন, ‘ডর’ ছবির জন্য চরিত্র তৈরির সময় তিনি অনুপ্রেরণা নিয়েছিলেন তোতলানো স্বভাবের এক সহপাঠীর কাছ থেকে।
শাহরুখ বলেন, ‘আমার এক ক্লাসমেট তোতলাতেন। পরে একটি বিবিসির ডকুমেন্টারি দেখি যেখানে বলা হয় কোনো শব্দ নিয়ে অতিরিক্ত সচেতন হলে মস্তিষ্ক সাড়া দেয় এক ধরনের ইলেকট্রিক কারেন্টের মতো। তখন ওই শব্দ উচ্চারণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।’
এই ব্যাখ্যার সূত্র ধরেই শাহরুখ প্রস্তাব দেন, রাহুল চরিত্রটি শুধু ‘কিরণ’ নামটি উচ্চারণ করার সময় তোতলাবে। কারণ সে এই নারীর প্রতি এতটাই মোহগ্রস্ত যে তার নামটাই উচ্চারণ করতে গিয়েই মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
‘চরিত্রটি কিরণের প্রতি এতটাই আবিষ্ট যে তার নামই বলতে পারে না ঠিক করে। বাকিটা সময় স্বাভাবিক কথা বলে, কিন্তু শুধু ‘কিরণ’ নামটি বলতেই তোতলায়’- বলেন শাহরুখ।
এই অভিনব সংলাপ বলিউডের ইতিহাসে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। ‘ক-ক-ক-কিরণ’ এখন শুধু একটি সংলাপ নয়, হয়ে উঠেছে প্রেম এবং ভয়াবহতা একসঙ্গে প্রকাশের এক প্রতীক।
প্রামাণ্যচিত্রে শাহরুখ আরও জানিয়েছেন, তিনি এবং আদিত্য চোপড়া প্রায়ই নানা আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করতেন। তিনি বলেন, ‘একবার আদিকে বলেছিলাম আমি কি ফোন কলটা উল্টো হয়ে ঝুলে করতে পারি? ও বলেছিল, ‘বাবা অনুমতি দেবে না।’
আদিত্য মাঝেমধ্যে শাহরুখকে বলতেন, ‘তুমি যদি কোনো দৃশ্যের প্রস্তাব দাও, বাবা মানবে না। কিন্তু আমি দিলে হয়তো হবে।’ এভাবে দুজন মিলে যশ চোপড়াকে প্রভাবিত করে মজা পেতেন। ‘ডর’ সিনেমায় এই সৃজনশীল বোঝাপড়াই পরবর্তীতে শাহরুখ খান ও আদিত্য চোপড়ার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের ভিত্তি তৈরি করে। যার ফলশ্রুতিতে বলিউড পায় ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘মহব্বতে’, ‘রাব নে বনা দি জোড়ি’-এর মতো কালজয়ী ছবি।
এলআইএ/এমএস