শিক্ষকের গলায় সাবেক ছাত্রীর ছুরিকাঘাত
রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষকের গলায় ছুরি চালিয়েছে আরেকটি কলেজের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৬)। সে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ওই প্রতিষ্ঠানে পড়ত।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষক ক্যান্টনমেন্টের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কলেজের প্রধান ফটকের সামনে একটি মেয়ে হেল্প হেল্প বলে চিৎকার করতে করতে দৌড়াচ্ছিল। এ সময় শিক্ষক মারুফ মোটরসাইকেল নিয়ে তার দিকে এগিয়ে যান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেয়েটি ওই শিক্ষকের গলা লক্ষ্য করে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মারুফ কারখীকে রাজশাহী ক্যান্টনমেন্টের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে নেওয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলের ধারণ করা একটি ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ সূত্রে জানা যায়, মেয়েটি তাদের প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্রী। সে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন একজন শিক্ষকের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুক চালাত এবং সেই আইডি থেকে স্কুলের শিক্ষার্থীদের এবং ক্লাসের মেসেঞ্জার গ্রুপে অশ্লীল ছবি পাঠাত। তবে বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরে তার বাবা-মাকে জানানোসহ বয়স কম হওয়ায় শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে অষ্টম শ্রেণিতে ওঠার পরও সে আবারও একই কাজ শুরু করে। পরে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ২০২৩ সালে তাকে স্কুল থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট-টিসি দেওয়া হয়। সে এখন রাজশাহীতে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত।
আহত শিক্ষক মারুফ কারখী বলেন, ‘মেয়েটির চিৎকার শুনে আমি ভেবেছিলাম কোনো ছিনতাইকারী তাড়া করেছে কি না। আমি তাকে না চিনেই দ্রুত এগিয়ে যাই। আর তখনই সে অতর্কিতভাবে আমার গলা লক্ষ্য করে ছুরিকাঘাত করে। হাত দিয়ে প্রতিহত করতে গিয়ে গুরুতর জখম হই। পরে সিএমএইচে গিয়ে গলায় ৩টি এবং হাতে ৫টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা বাসায় বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেয়েটি উন্মাদের মতো অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতে করতে বলছিল, ক্যান্ট স্কুলের যাকে পাব, তাকেই মারব। মেয়েটিকে তার পরিবার নিয়ে গেছে। আইনি ব্যবস্থার বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।’
এ বিষয়ে মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কেউ সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপকমিশনার গাজিউর রহমান কালবেলাকে জানান, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের বাইরে প্রধান ফটকের সামনে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তবে এ নিয়ে থানায় এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।