শিক্ষা খাতে জিডিপির কমপক্ষে ৫.৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবি

6 hours ago 5

 

শিক্ষা খাতে জিডিপির কমপক্ষে ৫.৫ শতাংশ বরাদ্দ ও ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করাসহ ১৫ দফা দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলনের অধীনে থাকা জাতীয় শিক্ষক ফোরাম।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ২০২৫- এ এসব দাবি উত্থাপন করা হয়। জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মো. নাছির উদ্দিন খান উত্থাপিত দাবিসমূহ উপস্থাপন করেন।

দাবিগুলো হলো-

১. শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে।

২. শিক্ষা খাতে জিডিপির কমপক্ষে ৫.৫ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে।

৩. জাতীয়করণের ঘোষণা ও বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদেরকে শতভাগ উৎসব ভাতা, ৪৫৫ শতাংশ বাড়িভাড়া ও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো চিকিৎসা ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।

৪. শিক্ষকদের স্বতন্ত্র উচ্চতর বেতন কাঠামো নির্ধারণ ও শিক্ষক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৫. আলিয়া মাদরাসার নতুন পাঠ্যবইগুলো থেকে ইসলামিক কালচার বহির্ভূত ছবি, ভাষা পরিহার করতে হবে এবং মাদরাসার স্বকীয়তা বজায় রেখে কারিকুলাম ও সিলেবাস প্রণয়নের লক্ষ্যে স্বতন্ত্র শিক্ষা কারিকুলাম বোর্ড গঠন করতে হবে।

৬. বিগত কারিকুলাম ও সিলেবাস বাস্তবায়নে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগিতাকারী অসাধু কর্মকর্তা ও সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডসহ মাদরাসা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল প্রশাসনিক দপ্তরে মাদরাসা শিক্ষিতদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।

৭. দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। ইসলাম ধর্মের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ‘আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া’ থেকে পাশ করা মাস্টার্স সমমান সনদ প্রাপ্তদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।

৮. প্রাইমারি ও হাইস্কুলের পাঠ্যবইসমূহ থেকে সকল অপ্রাসঙ্গিক ছবি, যৌনশিক্ষার আপত্তিকর ভাষা, অনৈসলামিক বিষয় ও বিপজ্জনক দিক পরিহার করতে হবে।

৯. নতুন পাঠ্যসূচিতে জুলাই বিপ্লবের ইতিহাসে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের অবদানকে কৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। অনতিবিলম্বে কওমি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস সুস্পষ্টভাবে জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

১০. সর্বপ্রথম কারফিউ ভেঙে রাজপথে নেতৃত্ব দানকারী রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এবং সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাইয়ের নাম পাঠ্যপুস্তকের জুলাই অভ্যুত্থান ইতিহাস অংশে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

১১. বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনে শিক্ষা কারিকুলামে এনজিও ফান্ডিং বন্ধ করতে হবে।

১২. প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ, এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের পরিবর্তে সরাসরি সহকারী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে উন্নীতকরণের ঘোষণা দিতে হবে।

১৩. নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী সাড়ে পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী বিভিন্ন সময় নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। এমনকি প্রাণহানি ঘটেছে। তাই কালো টাকা ও পেশিশক্তি রোধ করতে পিআর সিস্টেমের নির্বাচন পদ্ধতি চালু করতে হবে।

১৪. নৈতিক অবক্ষয়রোধ, ইভটিজিং, কিশোর গ্যাং, ডিভাইস আসক্তি ও মাদকের ভয়াবহতা থেকে আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

১৫. শিক্ষার আমূল সংস্কার করতে অতি দ্রুত ‘শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে এবং সংস্কার কমিশনে আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

এএএম/এএমএ/জেআইএম

Read Entire Article