জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে বর্তমানে শিপিং ব্যবসাকে লাভজনক উল্লেখ করে আরও জাহাজ ক্রয়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কমডোর মাহমুদুল মালেক।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সংস্থাটির কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুল মালেক বলেন, ‘জাহাজ অর্জনই আমাদের মূল টার্গেট। কারণ এ মুহূর্তে শিপিং ব্যবসা খুব প্রফিট্যাবল। ম্যানেজম্যান্টও তাদের সক্ষমতার পর্যায়ে পৌঁছেছে। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে শিপ পরিচালনার মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে মনে করি।’
জাহাজ কেনার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাহমুদুল মালেক আরও বলেন, ‘আমাদের টার্গেটের লক্ষ্যে তিনটি অপশন আমরা ডেভেলপ করেছি। এরমধ্যে একটি হলো- জাহাজ তৈরি করার। সেটা এক্সিকিউশনে দুই বছর থেকে তিন বছর সময় লাগবে। আরেকটি হলো- কনস্ট্রাকশনে থাকা কোনো জাহাজ থাকে সেটা আমরা কিনব। এ ছাড়া চালু থাকা পাঁচ বছরের কমে কোনো জাহাজ পেলে সেটিও আমরা ক্রয় করবো। আমরা যদি এ ধরনের কোনো সুযোগ পাই, তাহলে কেনার পর সরাসরি এমপ্লয়মেন্টে চলে যাবে। ব্যবসায় যোগ দিতে পারবে। এ তিনটি অপশন সামনে রেখে আগাচ্ছি, ওয়ার্ল্ড মার্র্কেটে কোনটি কি অবস্থায় আছে সেটা দেখা। কোনোভাবে যেন আমরা কোনো একটি জায়গায় লক হয়ে না যাই, সেজন্য তিনটি অপশন রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনার অগ্রগণ্যতা রয়েছে, এরমধ্যে টপ প্রাইয়োরিটি হলো জাহাজ অর্জন করা। আমাদের এখন যে পাঁচটি জাহাজ অপারেট করছে, এগুলো আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে নেওয়া। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চায়না এক্সিম ব্যাংকের একটা এগ্রিম্যান্ট হয়েছিল ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে। সেখানে এটা ১ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকার প্রকল্প ছিল। আমরা সেটার ইন্টারেস্টসহ আসল ২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা পরিশোধ করবো। এরই অংশ হিসেবে আমাদের মুনফা থেকে আমরা মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ৪৭৫ কোটি ২৫ লাখ ১৩ হাজার ৩৪০ টাকা মাননীয় উপদেষ্টার (নৌ-পরিবহন) কাছে হস্তান্তর করেছি। এটিকে বলা যায় টোকোন অব এক্সিবেশন।’
তিনি আরও বলেন, ‘জিটুজি ভিত্তিতে চায়নার সাথে আমাদের আরও চারটি জাহাজ কন্সট্রাকশনের প্রায় শেষ পর্যায়ে। আমাদের প্রাথমিক কর্মাশিয়াল যে এগ্রিম্যান্ট, সেটা হয়ে গেছে। লোন এগ্রিম্যান্ট কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। গত সপ্তাহে চায়না সিলকা ও এক্সিম ব্যাংকের প্রতিনিধি আসছিল। ইআরডি ও আমাদের সচিবের (নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়) সঙ্গেও মিটিং হয়েছে। আমরা যতদূর জানি, রেজাল্ট ইজ পজেটিভ। যদি এ মাসের মধ্যে বা আগামী মাসের আমরা অনুমোদনটা পাই, আমরা জাহাজ কেনার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবো। এখানে দুইটি হলো ট্যাংকার এবং দুইটি মাদার বাল্ক।’
জাহাজ বাড়ানো প্রসঙ্গে বিএসসির এমডি বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে যে দুটি জাহাজ কিনছি, সেটি নিয়ে আমাদের ইনিশিয়াল ডিসিশন হচ্ছে আমরা বাল্ক ক্যারিয়ার কিনবো। যেগুলোর সাইজ হবে ৫৫ হাজার থেকে ৬৬ হাজার টনের। ওয়ার্ল্ড মাকের্টে এ জাহাজগুলো এমপ্লয়ম্যান্টের যথেষ্ট সুযোগ আছে। এ ছাড়া কোরিয়ান প্রজেক্টও আমাদের সামনে আছে এবং চায়না থেকে আরও চারটি জাহাজ তৈরির অফার পেয়েছি। সবগুলো মিলে এ সময় বিএসসির অত্যন্ত সুবাতাস বইছে।’