বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, জাকসু নির্বাচনেও শিবিরের কারচুপি ও ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হওয়ায় ছাত্রদল নির্বাচন বর্জন করতে বাধ্য হয়েছে। প্রহসনের বিপরীতে প্রতিকার না পেলে কারচুপি ও ষড়যন্ত্রের সাক্ষী গোপাল হয়ে থাকার দল ছাত্রদল নয়।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের কইচাপুর ইউনিয়নের বিএনপির পৃথক ওয়ার্ডে সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নস্যাতে পরিকল্পিতভাবে নৈরাজ্য, রাজনৈতিক হানাহানি এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করতে জাতীয় নির্বাচনের আগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনের নামে প্রহসনের অয়োজন করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে প্রতিদিন ষড়যন্ত্র ও সংকট ঘনীভূত করা হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে কয়েকজন উপদেষ্টা ও নবীন-প্রবীণ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এবং অরাজনৈতিক কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি জড়িত। জনগণ নির্বাচনের পথে কোনো প্রতিবন্ধকতা বা নৈরাজ্য সহ্য করবে না।
তিনি বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেওয়া হবে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শাসন ও গণতন্ত্র ছাড়া দেশ চলবে না। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হতেই হবে, না হলে দেশ ও জাতির অভাবনীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। ডাকসু নির্বাচন বিএনপির চোখ খুলে দিয়েছে। বাংলাদেশপন্থিদের বিজয় ঠেকিয়ে দিতে ভারতপন্থি ও পাকিস্তানপন্থিদের অশুভ আঁতাত ধরা পরে গেছে। ’৭১-এর স্বাধীনতা ও ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থান বিরোধী অপশক্তি এক হয়ে সর্বনাশা খেলায় মেতে উঠেছে। ডাকসু নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় নির্বাচনে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে। ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না। হতাশার কিছু নাই, জনগণকে সঙ্গে রেখে, জনগণকে সঙ্গে রেখে মনোবল অটুট রাখতে হবে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের।
‘ডাকসু নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় নির্বাচনে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে। কয়লা ধুলে যেমন ময়লা যায় না, তেমনি আওয়ামী লীগ ও জামায়তের খাইসলোত যাবে না। এরা রাজনীতির সরল ও স্বাভাবিক পথে নয়, সবসময় বাঁকা পথ ধরে নিজেদের দলীয় হীনস্বার্থ উদ্ধার করতে চায়। তাদের মধ্যে অদ্ভুত মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তারা উভয়েই গণহত্যাকারী, উভয়েই ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাকানিজমে সিদ্ধহস্ত, উভয়েই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন, উভয়েই মিথ্যাবাদী, প্রতারক, মোনাফেক ও অকৃতজ্ঞ। ক্ষমতার লোভ ও দলীয় স্বার্থে তারা জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে বিদেশি প্রভুদের মনোরঞ্জন ও পদলেহন করে।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এরা কেউ ভারতপন্থি, কেউ পাকিস্তানপন্থি দল। দিল্লী বা পিন্ডিতে বৃষ্টি হলে এরা ঢাকা থেকে ছাতা ধরে। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় যেতে পারবে না, সে কারণে তারা সবসময় শয়তানি পরিকল্পনায় ব্যস্ত থাকে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যদি শয়তানি চিন্তা কেউ করে, সমুচিত জবাব পাবে তারা।
তিনি গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দিল্লিতে পালিয়ে যাওয়া পতিত স্বৈরাচার হাসিনা নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে নির্বাচন বানচাল করতে। গ্রামে গ্রামে হাসিনার অনুসারী কেউ সেই ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত থাকে কী না , সতর্কভাবে তা পর্যবেক্ষণ করুন। কেউ যদি থেকে থাকে তাহলে ষড়যন্ত্রকারীদের তালিকা তৈরি করুন। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ণ ও দেশ ও জাতিকে গণতান্ত্রিক ধারায় এগিয়ে নিতে রাজনৈতিকভাবে তাদের প্রতিহত করতে হবে। কোনোভাবে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না।
তিনি আরও বলেন, অবশ্যই আগামী রোজার আগে নির্বাচন হতে হবে। তিনি ঘরে ঘরে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের সালাম পৌঁছে দিয়ে ধানের শীষের প্রচারণা এবং জনকল্যাণে ও দেশ গঠনে তারেক রহমানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
এ সময় কইচাপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সায়েদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব নুরুল ইসলমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, সদস্যসচিব আবু হাসনাত বদরুল কবীর, উপজেলা বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ, আলী মাহমুদ মোর্শেদ আলম, রেজাউল আহসান, জেলা যুবদলের সহসভাপতি তারিকুল আয়ালম চঞ্চল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক রুহুল আমিন খান, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান, পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব তাজবীর হোসেন অন্তর, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মির্জা সারওয়ার তাইয়েব, উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব জাকির হোসেন চঞ্চল, কইচাপুর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইফতেখার রসুল খোকন, মির্জা মিজান, রুহুল আমিন ফকির, আবুল কাশেম, নূর হোসেন, হারুন অর রশীদ, মির্জা বাশার, আবুল কাশেম প্রমুখ।