বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম জাপানের ‘মিয়াজাকি’। ‘সূর্যডিম’ নামেও পরিচিত বিশেষ এই আম। দেড় থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয় মিয়াজাকি আম।
সেই আমের চারা নিজ বাড়িতে রোপণ করেছিলেন কুষ্টিয়ার কুমারখালীর এক শিল্পপতি। প্লাস্টিকের ড্রামে লাগানো একটি ‘মিয়াজাকি’ আমগাছ চুরির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই শিল্পপতি।
কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা বাড়িটির নাম ‘প্যারেন্ট লজ’। এটি উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগরে অবস্থিত। বাড়িটির মালিক হেলথকেয়ার ফার্মাসিটিক্যালের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আহমেদ।
গাছটির দাম প্রায় লক্ষাধিক টাকা। প্রায় এক বছর আগে আলাউদ্দিন আহমেদ গাছটি জাপান থেকে নিয়ে এসে তার স্ত্রী সুরাইয়া বিলকিসের জন্মদিনে উপহার দিয়েছিলেন।
আলাউদ্দিন আহমেদ ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক মো. সাইফুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলাউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী গাছটি প্লাস্টিকের ড্রামে বিলাসবহুল বাড়ি প্যারেন্টের লজের দক্ষিণ পাশে লাগিয়েছিলেন। গত ১ সেপ্টেম্বর ড্রামসহ গাছটি উধাও হয়ে যায়। সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও গাছটির সন্ধান না পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ব্যবস্থাপক সাইফুর রহমান।
বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আলাউদ্দিন নগর রেলগেট-শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি সড়ক ঘেঁষে অবস্থিত বিলাসবহুল সাদা রঙের বহুতল ভবন ‘প্যারেন্ট লজ’। বাড়িটির চারদিকে পাকা প্রাচীর। একাধিক প্রবেশপথের বাড়িটি সিসিটিভি ক্যামেরায় আওতাভুক্ত। গেটে একজন পাহারাদার। প্রাচীরের ভেতরে সবুজায়ন। দেশি-বিদেশি ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। তবে মিয়াজাকি জাতের আমগাছটি নেই।
এসময় বাড়ির পাহারাদার আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ছয় মাস হলো যোগদান করেছি। গাছের বিষয় কিছু জানি না।’
সবুজায়নের লক্ষ্যে প্যারেন্ট লজসহ আশপাশের এলাকায় প্রায় দেড় হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে বলে জানান আলাউদ্দিন আহমেদ ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক গোলাম হাফিজ।
তিনি বলেন, ‘গতবছর জন্মদিনে স্যার জাপান থেকে মিয়াজাকি আমগাছটি ম্যাডামকে উপহার দিয়েছিলেন। মূল্যবান গাছটির দাম লক্ষাধিক টাকা। কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও হঠাৎ গাছটি পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় আজ ব্যবস্থাপক থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।’
লিখিত অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘মূল্যবান ও উপহারের গাছ হারানোর ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ পড়েছে। অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ওসি আরও বলেন, একটি গাছ হারানোর এমন অভিযোগ, এই এলাকায় হয়তো এটিই প্রথম।
আল-মামুন সাগর/এসআর/জেআইএম