শিশুর জন্মের পর প্রথম ছয় মাস শুধু মায়ের বুকের দুধই খাবার। এই সময় শিশুর পুষ্টি ও সুরক্ষা পুরোপুরি মায়ের ওপর নির্ভরশীল। তাই মায়ের প্রতিদিনের খাবার ঠিক কতটা স্বাস্থ্যকর সেটা শুধু মায়ের জন্যই নয়, শিশুর জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনেকেই না জেনে কিছু খাবার খেয়ে ফেলেন, যা শিশুর স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এই সময় কিছু খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।
চলুন জেনে নিই, ব্রেস্টফিডিং চলাকালে কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত নয় এবং কেন।
যেসব মাছে পারদ (Mercury) থাকে
মাছ খুবই স্বাস্থ্যকর- প্রোটিন, ওমেগা-৩, ভিটামিনে ভরপুর। তবে সব মাছ নয়!
টুনা, সোর্ডফিশ, মার্লিন- এ ধরনের কিছু বড় সমুদ্রের মাছ শরীরে পারদ (mercury) জমাতে পারে, যা বুকের দুধের মাধ্যমে শিশুর শরীরে পৌঁছে তার মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে।
কী করবেন :
- কিছু মাছ বেশি বেশি খান। যেমন : ইলিশ, রুই, কাতলা বা দেশি ছোট মাছ।
- বড়, গভীর সমুদ্রের মাছ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
আরও পড়ুন : যাদের জন্য ডাবের পানি খাওয়া উচিত নয়
আরও পড়ুন : ত্বকের যত্নে ম্যাজিকের মতো কাজ করে যে ৫ ফল
কফি বা ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়
আপনি হয়তো ঘুমের ক্লান্তি কাটাতে কফি খাচ্ছেন। কিন্তু এটা আপনার শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ক্যাফেইন বুকের দুধে গিয়ে শিশুর শরীরে পৌঁছায়- ফলে বাচ্চা ব্যস্ত হয়ে পড়ে, ঘুমাতে চায় না, এমনকি হজমের সমস্যাও হতে পারে।
কী করবেন :
- দিনে ১ কাপের বেশি কফি না খাওয়াই ভালো।
- চেষ্টা করুন ঘুম বা আরাম পাওয়া কোনো বিকল্প খুঁজে নিতে। যেমন- হালকা হাঁটাহাটি বা গরম দুধ খাওয়া।
প্রক্রিয়াজাত খাবার (Processed Food)
সসেজ, ফ্রোজেন নাগেটস, ইনস্ট্যান্ট নুডলস বা প্যাকেটজাত খাবার- এগুলো খেতে সময় বাঁচায় ঠিকই তবে আপনার ও শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।
এ ধরনের খাবারে থাকে অতিরিক্ত লবণ, চিনি ও কৃত্রিম কেমিক্যাল, যা আপনার দুধের গুণগত মান নষ্ট করতে পারে এবং ভবিষ্যতে শিশুর খাদ্যাভ্যাসও খারাপ হয়ে যেতে পারে।
কী করবেন :
- যতটা সম্ভব তাজা, ঘরে রান্না করা খাবার খান।
- ফল, সবজি, ডাল, ডিম, ভাত বা খিচুড়ি বেছে নিন।
অ্যালকোহল (মদ্যপান)
ব্রেস্টফিডিং চলাকালীন অ্যালকোহল খাওয়া একেবারেই নিষেধ। কারণ অ্যালকোহল রক্তের সঙ্গে দুধে মিশে যায় এবং শিশুর শরীরে প্রবেশ করে মস্তিষ্কের বিকাশে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
কী করবেন :
- ব্রেস্টফিডিং চলাকালে সম্পূর্ণভাবে অ্যালকোহল ত্যাগ করুন।
- বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি থাকলেও সতর্ক থাকুন, শিশুর সুস্থতা সবার আগে।
মা হিসেবে আপনি নিজের যত্ন নিলে তবেই আপনার শিশুরও যত্ন হবে। এই সময়টা খুবই সংবেদনশীল, তাই কী খাচ্ছেন সেটা নিয়ে একটু সচেতন থাকুন। আপনার খাবারই এখন আপনার শিশুর পুষ্টির একমাত্র উৎস।
মনে রাখবেন, সুস্থ মা মানেই সুস্থ শিশু।
সূত্র : হেলথলাইন