ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে অফুরন্ত খুশির উৎস। এই আনন্দ-খুশি শিশুর জন্য আলোকের ঝরনাধারা বয়ে আনে। অফুরন্ত উচ্ছ্বাসে রঙিন হয়ে ওঠে একটি দিন। এক বছর অপেক্ষার পর ঈদুল ফিতর অনাবিল প্রাণশক্তি নিয়ে আসে সবার মুখে হাসি ফোটাতে। বিশেষ করে শিশুর নতুন জামা, প্যান্ট, জুতা আর হাতে মেহেদি পরার উৎসব রাঙিয়ে দেয় চারপাশ। হাতঘড়ি, রঙিন চশমা ও বেলুন হাতে বন্ধুদের সঙ্গে স্মৃতিময় মুহূর্ত উপভোগ করার সুযোগ তৈরি হয়।
শিশুরা নিষ্পাপ ও পবিত্র। তারা ফুলের মতো ফুটে থাকে। তাদের মনেও পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ফুটে ওঠে ঈদ এলে। ঘুচে যায় সব ধরনের ভেদাভেদ। কাঁধে কাঁধ মিলেয়ে তারা উপভোগ করে ঈদুল ফিতর। মহিমাময় এই উৎসব মুসলিম সমাজে দারুণ সৌহার্দের সৃষ্টি করে। এতিমখানার শিশুরাও এদিন আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারে। পথশিশু, অভাবী বা অনাহারী শিশুও এদিন পেট পুড়ে খেতে পায়। ধনী-গরিবের মাঝে থাকে না কোনো দেওয়াল।
যে পরিবারে শিশু আছে; সে পরিবার যেন বেহেশতের বাগান। তাই তো শিশুদের কোলাহলে ঈদের সকালে বেহেশতি আবেশ তৈরি হয়। আগের দিন সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে চিকন বাঁকা চাঁদ দেখার মধ্য দিয়ে খুশির ফোয়ারা ছড়িয়ে পড়ে। তাদের রাত কাটে যেন নির্ঘুম। কখন ভোর হবে, কখন নতুন জামা পরবে। আঁধার কেটে ভোর হতেই গোসল করে নতুন পোশাক পরে তারা বেরিয়ে পড়ে আনন্দ মিছিলে। ঈদগাহ ময়দানে তাদের উপস্থিতি দেখে মনে হয়, যেন একেকটা বেহেশতি ফুল।
শিশুর এই অনাবিল আনন্দ বাবা-মায়ের মনেও খুশির জোয়ার আনে। সন্তানের খুশি দেখে তারাও তৃপ্ত হোন। তাদের মুখে হাসি ফোটে। পরিবারের বড়দের চেয়ে শিশুদের আনন্দই চোখে পড়ার মতো। তাদের প্রকাশভঙ্গি নিষ্কলুষ ও সৌরভময়। তাই প্রত্যেক বাবা-মা তার শিশুসন্তানকে আনন্দ উপভোগ করার ব্যবস্থা করে দিতে পেরে তৃপ্তির ঢেকুড় তোলেন। সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটাতে প্রাণন্তকর চেষ্টা করেন।
মুসলিম বিশ্বের সবার জন্যই পালিত হয় ঈদুল ফিতর। তাই কামনা করি, পৃথিবীর সব শিশু আনন্দে থাকুক। বছরের প্রতিটি দিন তাদের জন্য হয়ে উঠুক ঈদের মতোই আনন্দময়। ফিলিস্তিনের নির্যাতিত শিশুদের মুখেও হাসি ফুটুক। মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করুক। ঈদ হোক সবার জন্য আনন্দময়। ঈদ মোবারক।
এমআইএইচ/এএসএম