শিশুর চোখের সমস্যার এসব লক্ষণ খেয়াল রাখুন
শিশুরা অনেক সময় নিজেদের সমস্যার কথা ঠিক করে বলতে পারে না—বিশেষ করে চোখ বা দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হলে। তারা বোঝে না, ঠিক কী হচ্ছে তাদের সঙ্গে, আর বাবা-মায়েরাও বুঝে উঠতে পারেন না। অথচ দৃষ্টিশক্তি হচ্ছে শেখার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
চোখের যত্ন নিয়ে কাজ করা মুম্বাইয়ের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. জে গয়াল বলেন, অনেক শিশু প্রতিদিন স্কুলে যায় কিন্তু তাদের চোখের কোনো পরীক্ষা হয় না। ফলে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা বেড়ে যায়—পড়াশোনায় মন বসে না, খেলার সময় ঝামেলা হয়, এমনকি আত্মবিশ্বাসেও প্রভাব পড়ে।
আরও পড়ুন : সঙ্গী আপনাকে নিয়ে আগ্রহী নন বুঝবেন যে ৬ আচরণে
আরও পড়ুন : ছবিতে প্রথমে কী দেখছেন বলে দেবে, মানুষ আপনাকে কেমনভাবে দেখে
শিশুর চোখের সমস্যা যদি শুরুতেই চিহ্নিত করা যায়, তাহলে তা দ্রুত ও সহজে চিকিৎসা করা সম্ভব। এজন্য বাবা-মা ও শিক্ষকদের সচেতন হওয়া জরুরি।
শিশুর চোখে সমস্যা আছে কি না বুঝবেন কীভাবে? ডা. গয়াল কিছু লক্ষণের কথা বলেছেন, যেগুলো দেখে শিশুর চোখের সমস্যা শনাক্ত করা যায়:
মনোযোগ ঠিক থাকে না
শিশু যদি পড়া, আঁকা বা খেলার সময় মনোযোগ ধরে রাখতে না পারে, তাহলে চোখে সমস্যা থাকতে পারে। বইয়ের অক্ষর স্পষ্ট না দেখলে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
খুব কাছে গিয়ে স্ক্রিন দেখা
টিভি বা ফোন একদম কাছে নিয়ে দেখা ভালো নয়। এটা চোখের ওপর চাপ ফেলে এবং দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে দেয়।
চোখ ঘষতে থাকা
শিশু যদি বারবার চোখ ঘষে, তাহলে বুঝতে হবে চোখে অস্বস্তি হচ্ছে। এটি ক্লান্তি, চোখের অ্যালার্জি বা অন্য কোনো সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
চোখ বা মাথাব্যথা হওয়া
দিন শেষে শিশুর যদি চোখে বা মাথায় ব্যথা হয়, তাহলে সেটিও চোখের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় চোখের অতিরিক্ত চাপ এই ব্যথার কারণ হয়।
চোখ কুঁচকানো
দূরে কিছু দেখতে গেলে চোখ কুঁচকানো মানে শিশু স্পষ্টভাবে দেখতে পারছে না। এটা রিফ্র্যাকটিভ সমস্যা (দূরদৃষ্টি বা কাছের দৃষ্টির ত্রুটি) হতে পারে।
এক চোখ ঢেকে দেখা বা মাথা ঝোঁকানো
শিশু যদি এক চোখ ঢেকে কিছু দেখে বা মাথা বাঁকিয়ে দেখে, তাহলে তা হতে পারে ‘লেজি আই’ বা চোখের অসামঞ্জস্যতার লক্ষণ।
কী করবেন এখন?
- স্কুলে বা বাড়িতে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করান
- চোখে কোনো লক্ষণ দেখা গেলে চোখের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান
দৃষ্টিশক্তি ঠিক না থাকলে পড়াশোনা, খেলা ও আত্মবিশ্বাস সবই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
ডা. গয়াল বলেন, ‘শিশুর চোখের যত্ন শুধু আজকের জন্য নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ।’ তাই সময়মতো সচেতন হন, লক্ষণগুলো খেয়াল করুন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
শিশুর চোখের সমস্যা ছোট মনে হলেও এর প্রভাব হতে পারে অনেক বড়। আপনার শিশুটি যদি ভালোভাবে দেখতে না পায়, তাহলে তার শেখা, বেড়ে ওঠা আর আত্মবিশ্বাস—সবকিছুই ব্যাহত হবে।
আরও পড়ুন : সঙ্গীর কথা বলা বন্ধ করে দেওয়া শুধু অভিমান নয়, হতে পারে মানসিক নির্যাতন
আরও পড়ুন : স্মার্টফোনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রক্ষায় মানুন এই ৫ নিরাপত্তা টিপস
তাই শিশুর চোখের যত্ন নিন নিয়মিত। এটি তাদের সুস্থ, সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস