গরমে সারাদিন এসি চললেও শীত এলেই বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে। কিন্তু বন্ধ করে রাখলেই এসি নিরাপদ থাকে এ ধারণা ভুল। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করলে এসির ভেতরে ধুলা, আর্দ্রতা, ফাঙ্গাস জমে কিংবা গ্যাসের চাপ কমে পরের মৌসুমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই শীতের আগে ও শীতকালে কিছু সহজ যত্ন নিলে এসি বহুদিন টিকবে এবং চালু করলেই আগের মতো ঠান্ডা করবে।
১. ইনডোর ইউনিট পরিষ্কার করে নিন
শীতকালে ঘর বন্ধ থাকে, ফলে ধুলা জমার প্রবণতা আরও বেশি। এসির ফিল্টার খুলে পরিষ্কার পানি বা হালকা সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন। ফিল্টার খুব নোংরা হলে এয়ারফ্লো কমে যায়, কম্প্রেসরের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। ১০-১৫ দিনে একবার ফিল্টার পরিষ্কার করলে ব্যাকটেরিয়া ও দুর্গন্ধ তৈরি হয় না। পরিষ্কার ফিল্টার মানে আগামী মৌসুমে এসি চালালেই দ্রুত ঠান্ডা, কম বিদ্যুৎ খরচ।
২. আউটডোর ইউনিট চেক করুন
বাইরে থাকা আউটডোর ইউনিটে ধুলা, পাতা বা ময়লা জমা থাকলে হিট এক্সচেঞ্জ ঠিকমতো হয় না। ব্যাক কভার খুলে নরম ব্রাশ বা ব্লোয়ার দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন। আউটডোরের সামনে যেন বন্ধ বা আটকানো কিছু না থাকে। শীতকালে দীর্ঘদিন বন্ধ রাখলে আউটডোরে কাভার দিয়ে রাখুন। অনেক সময় ইঁদুর বা পোকা তার কেটে সমস্যা তৈরি করে, তাই মাঝে মাঝে চেক করা জরুরি।
৩. এসির কনডেনসার ও ইভাপোরেটর কয়েল পরিষ্কার
বেশি ব্যবহারের পর কয়েলগুলোতে ধুলা জমে বরফ ধরে বা কুলিং কমে যায়। কয়েল ক্লিনার থাকলে স্প্রে করে পরিষ্কার করা যায়। না হলে পেশাদার টেকনিশিয়ান দিয়ে সার্ভিস করান। কয়েল পরিষ্কার করলে কুলিং ২০-৩০শতাংশ পর্যন্ত উন্নতি হয় এবং কম্প্রেসরের চাপ কমে।
৪. গ্যাস লিক বা প্রেসার চেক করে নিন
অনেক সময় দীর্ঘদিন ব্যবহার না করলে গ্যাসের চাপ কমে যায়, ছোট লিকও ধরা পড়ে না। শীতের সময়ে গ্যাস চেক করিয়ে নিলে পরের মৌসুমে হঠাৎ সার্ভিসিংয়ের ঝামেলা থাকে না। গ্যাস কম থাকলে এসি অনেক কম ঠান্ডা করে, কিন্তু বিদ্যুৎ বেশি খরচ করে। এটা রক্ষণাবেক্ষণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর একটি।
৫. সার্কিট ব্রেকার ও রিমোট চেক
শীতকালে বন্ধ থাকায় ব্যাটারি কমে যেতে পারে বা সার্কিটে সমস্যা তৈরি হতে পারে। রিমোট ব্যাটারি পরিবর্তন করে রাখুন। এসি চালু করলে অন-কয়েল বা অজানা শব্দ এলে টেকনিশিয়ান ডাকুন। অনেক সময় সমস্যার শুরু হয় ছোট জায়গা থেকে, তাই অগ্রিম চেক নিরাপদ।
৬. ময়েশ্চার ও ফাঙ্গাস প্রতিরোধ
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে এসির ভেতরে আর্দ্রতা জমে ফাঙ্গাস বা খারাপ গন্ধ হয়। সপ্তাহে অন্তত একবার শুধু ফ্যান মোড চালান ২০-৩০ মিনিট। এতে জমে থাকা আর্দ্রতা বের হয়ে যায়। ঘরে খুব বেশি আর্দ্রতা হলে ডিহিউমিডিফায়ার বা ভেন্টিলেশন ব্যবহার করুন। ফ্যান মোড চালানোর এই ছোট অভ্যাস পরের গরমে এসি চালালে বাজে গন্ধ থেকে বাঁচায়।
৭. স্ট্যান্ডবাই মোডে চালু করে দেখুন
শীতকালেও মাসে অন্তত একদিন এসি ৫-১০ মিনিট চালান। রেফ্রিজারেন্ট সিস্টেম সচল থাকে। কম্প্রেসরের সিল শুকিয়ে যায় না। সার্কিট ও মোটর ঠিকঠাক কাজ করছে কি না বোঝা যায়। অনেক সময় দীর্ঘদিন পরে চালালে কম্প্রেসর স্টার্ট নিতে সমস্যা করে আগেই টেস্ট করলে ঝামেলা কমে।
৮. সার্ভিস করিয়ে নিন
শীতের সময় সার্ভিসিং করা সবচেয়ে সুবিধাজনক কারণ তখন চাপ কম থাকে, কাজ ভালো হয়। ওয়াশিং, ফিল্টার, গ্যাস, কুলিং পরীক্ষা সবই করা যায়। পরের গরমে হঠাৎ সমস্যা হলে সার্ভিস পাওয়া কঠিন ও খরচ বেশি। প্রতি বছর ১-২ বার সার্ভিস করালে এসির আয়ু অনেক বাড়ে।
আরও পড়ুন
বাড়িতে স্প্লিট এসি পরিষ্কার করবেন যেভাবে
গরমে এসি ঘামলে সতর্ক হওয়া জরুরি
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
কেএসকে/জিকেএস

7 hours ago
6








English (US) ·