শীতে বাড়ছে ডায়রিয়া, ৮৫ শতাংশ রোগীই শিশু

2 hours ago 5

কয়েকদিন ধরে পড়ছে তীব্র শীত। বেড়েছে শীতের দাপট। শীত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হু হু করে বেড়েছে শীতজনিত রোগ। যার মধ্যে অধিকাংশ শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীসহ আশপাশের জেলার শিশুরা ব্যাপক হারে রোটা-ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে চাঁদপুরের মতলব আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার প্রতিটি ওয়ার্ড ডায়রিয়া রোগীতে ভরপুর, হাসপাতালের বারান্দায়ও অনেক রোগী। রোগীদের অধিকাংশই শিশু। রোগীদের চিকিৎসা ও সেবায় কর্মরত চিকিৎসক ও নার্স আন্তরিক।

৩০ ডিসেম্বর থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত গেল ১৫ দিনে রোগে আক্রান্ত হয়ে আইসিডিডিআরবি চাঁদপুরের মতলব হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪ হাজার ৫৫০ জন। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছে ৩০৩ জন। প্রতি ঘণ্টায় রোগী ভর্তি ১৩ জন। শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সী ৩ হাজার ৮৭৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু শতকরা ৮৫.২ জন।

ভর্তি রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তিনগুণের বেশি। তবে কারো মৃত্যু হয়নি। প্রায় ২০/২৫ ভাগ রোগীই কয়েক ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে যায়। শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ভাইরাসের বংশবৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ থাকায় ও দূষিত পানি প্রাণ করায় শীতে এত হারে শিশুরা শীতকালীন ডায়রিয়া বা রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য চিকিৎসকদের। 

মতলব আইসিডিডিআরবি সূত্রে জানা যায়, ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৩৮৫ জন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ২১১ জন, হাজীগঞ্জ উপজেলার ১৯০ জন, কচুয়া উপজেলার ২৯১ জন, মতলব উত্তর উপজেলার ১৫৮ জন, মতলব দক্ষিণ উপজেলার ১৪৩ জন, শাহারাস্তির ১১৫ জন, কুমিল্লার বরুড়ার ২৩৯ জন, ব্রাহ্মণপাড়ার ৮৬ জন, বুড়িচংয়ের ১৪২ জন, চান্দিনার ২৫৮ জন, কুমিল্লা সদরের (আদর্শ) ১৭০ জন, কুমিল্লা সদরের (দক্ষিণ) ১২৪ জন, চৌদ্দগ্রামের ৮৩, তিতাসের ১২৬ জন, দাউদকান্দির ২৩০ জন, দেবিদ্বারের ৩১৬ জন, হোমনার ৭৯ জন, লাকসামের ১০৬, মেঘনার ৩ জন, মনোহরগঞ্জের ৩৬ জন, মুরাদনগরের ৩২৪ জন, নাঙ্গলকোটের ৫৯ জন, লক্ষ্মীপুর সদরের ১২৭ জন, কলমনগরে ২৭ জন, রায়পুরের ৮২ জন, রামগঞ্জের ১০৬, নোয়াখালী সদরের ১৪ জন, বেগমগঞ্জের ৪ জন, চাটখীলের ৪৯ জন, হাতিয়ার ২ জন, শেনবাগরে ২ জন, সোনাইমুড়ীর ২৪ জন, সুবর্নচরের ১ জন, শরীয়তপুরের সখীপুর উপজেলার ৬৭ জন, ঘোসারহাটের ১ জন, বেদরগঞ্জের ৫ জন। বাকিরা মুন্সিগঞ্জ, ফেনী আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছে।  

ডা. এম ডি আল ফজল খান কালবেলাকে বলেন, আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন, ওষুধ ও চিকিৎসা-সরঞ্জাম রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং শিশুদের প্রতি যত্নবান থাকলে এ রোগ এড়ানো সম্ভব। হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৭০টি। কিন্তু এক সঙ্গে ৪০০ রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে পারি।

Read Entire Article