শীতের সময়ে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বাড়ে

বর্তমান জীবনযাত্রার কারণে অনেকেরই কিডনিতে পাথরের সমস্যার কথা প্রায়ই শোনা যায়। শীতের সময় কিডনির জন্য ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতকালেই কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আপাতদৃষ্টিতে শীতকাল স্বস্তিদায়ক মনে হলেও এই সময়ে জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তনের কারণে কিডনি ঝুঁকির মুখে পড়ে। সময়মতো চিকিৎসা না করলে এটি তীব্র ব্যথা বা মারাত্মক শারীরিক জটিলতার কারণও হয়ে উঠতে পারে। কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণ এনভায়রনমেন্ট হেলথ ইনসাইট জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, শীতকালে কিডনিতে পাথর জমার প্রধান কারণ হলো শরীরের ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘাম কম নিঃসৃত হয় এবং স্বাভাবিকভাবেই তৃষ্ণার অনুভূতি কমে যায়। ফলে অধিকাংশ মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পানি পান করেন। এর ফলস্বরূপ মূত্রে থাকা ক্যালসিয়াম, অক্সালেট ও ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্ব বেড়ে ধীরে ধীরে পাথরের আকার ধারণ করে। কিডনি সুরক্ষিত রাখতে যে নিয়ম মেনে চলবেন ১. দিনে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা জরুরি। পিপাসা লাগার অপেক্ষা না করে পানি পান করা উচিত। পানির পানের পাশাপাশি, ডিটক্স পান

শীতের সময়ে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বাড়ে

বর্তমান জীবনযাত্রার কারণে অনেকেরই কিডনিতে পাথরের সমস্যার কথা প্রায়ই শোনা যায়। শীতের সময় কিডনির জন্য ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতকালেই কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আপাতদৃষ্টিতে শীতকাল স্বস্তিদায়ক মনে হলেও এই সময়ে জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তনের কারণে কিডনি ঝুঁকির মুখে পড়ে। সময়মতো চিকিৎসা না করলে এটি তীব্র ব্যথা বা মারাত্মক শারীরিক জটিলতার কারণও হয়ে উঠতে পারে।

কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণ
এনভায়রনমেন্ট হেলথ ইনসাইট জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, শীতকালে কিডনিতে পাথর জমার প্রধান কারণ হলো শরীরের ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘাম কম নিঃসৃত হয় এবং স্বাভাবিকভাবেই তৃষ্ণার অনুভূতি কমে যায়। ফলে অধিকাংশ মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পানি পান করেন। এর ফলস্বরূপ মূত্রে থাকা ক্যালসিয়াম, অক্সালেট ও ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্ব বেড়ে ধীরে ধীরে পাথরের আকার ধারণ করে।

কিডনি সুরক্ষিত রাখতে যে নিয়ম মেনে চলবেন

১. দিনে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা জরুরি। পিপাসা লাগার অপেক্ষা না করে পানি পান করা উচিত। পানির পানের পাশাপাশি, ডিটক্স পানীয়, হার্বাল টি কিংবা ফলের রস পান করা যেতে পারে। এটি শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং মূত্রকে পাতলা রাখতে সাহায্য করবে।

২ লবণ বা সোডিয়াম কিডনির অন্যতম শত্রু। রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। প্রাণীজ প্রোটিন গ্রহণ ঝুঁকি বাড়ায়। আমেরিকান সোসাইটি অব নেফ্রোলজির ক্লিনিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত ২০১৬ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ,লবণ এবং প্রাণীজ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার মূত্রে ক্যালসিয়াম এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি করে, যা সরাসরি পাথর গঠনে অবদান রাখে।
তাই রান্নায় অতিরিক্ত লবণ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে এবং প্যাকেটজাত বা প্রক্রিয়াজাত খাবার-যেমন চিপস, সসেজ ইত্যাদি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত। শীতের সময় ফাস্টফুড খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে, তাই এই অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করাও জরুরি।

৪. কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা কমাতে সাইট্রাস জাতীয় ফল বা লেবুজাতীয় ফল খাওয়া জরুরি। ভিটামিন সি রক্তে থাকা অতিরিক্ত খনিজ শোষণ করে কিডনিকে সুরক্ষিত রাখে। পাশাপাশি এটি মূত্রাশয়ের সংক্রমণ প্রতিরোধেও সহায়তা করে।

৫. কিডনি সুস্থ রাখতে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা জরুরি। কারণ স্থূলতা বা দেহের অতিরিক্ত ওজন কিডনির জন্য ক্ষতিকর। কিডনি ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টস-এ ২০২২ সালের একটি প্রধান পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় দেখা গেছে, স্থূলতা, ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকা ব্যক্তিদের মূত্রতে পাথর তৈরির যৌগের মাত্রা বেশি থাকে।
এছাড়া দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে থাকা কিডনির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। তাই কিডনি সুস্থ রাখতে নিয়মিত হাঁটাচলা ও হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন।

সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনভায়রনমেন্ট হেলথ ইনসাইট জার্নাল, বাড়ায়। আমেরিকান সোসাইটি অব নেফ্রোলজির ক্লিনিক্যাল জার্নাল-২০১৬

আরও পড়ুন:
গ্লুটেন কি আসলেই ক্ষতিকর
দীর্ঘদিন ভেজাল খাবার খেলে শরীরে কী ঘটে

এসএকেওয়াই/এমএস

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow