ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) আইপিএল বাদে অন্য লিগ খেলার নতুন নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) নীতিমালার কারণে ইংলিশ ক্রিকেটে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। টি২০ ফ্রিল্যান্সার খেলোয়াড়রা এই নীতিকে তাদের আয় এবং সুযোগ সীমাবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে মনে করছেন। খেলোয়াড়রা আগামী সপ্তাহে একটি জরুরি বৈঠকের অনুরোধ জানিয়েছেন, যেখানে তারা এই নীতির প্রভাব ও আইনি বিকল্প নিয়ে আলোচনা করবেন।
পেশাদার ক্রিকেটারদের সংগঠন (পিসিএ)-এর অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী ড্যারিল মিচেল জানিয়েছেন, ‘পিসিএর আইনজীবীরা নীতিমালাটি বিশ্লেষণ করছেন এবং খেলোয়াড়দের উদ্বেগের বিষয়ে বিস্তারিত মতামত সংগ্রহ করছেন।’
ইসিবির নতুন নীতির কারণ
ইসিবি প্রধান রিচার্ড গোল্ড জানিয়েছেন, নতুন নীতির লক্ষ্য ইংলিশ ঘরোয়া ক্রিকেটের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। বিশেষ করে, কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ, টি২০ ব্লাস্ট এবং দ্য হান্ড্রেড-এর মতো প্রতিযোগিতাগুলোর সময়কালীন এনওসি প্রদান সীমিত করা হবে। এর ফলে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)-এর মতো টুর্নামেন্টগুলোতে খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে, কারণ ২০২৫ সালে পিএসএল কাউন্টি মৌসুমের শুরুর সাথে সংঘর্ষ ঘটাবে।
খেলোয়াড়দের প্রতিক্রিয়া
টি২০ ফ্রিল্যান্সারদের একটি গ্রুপ এই নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। জেসন রয়ের মতো খেলোয়াড়রা ২০২৪ সালে মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি)-এর জন্য টি২০ ব্লাস্ট ছেড়ে খেলেছিলেন। এই ধরনের উদ্যোগ এখন তা সীমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
একজন ব্রিটিশ খেলোয়াড়দের এজেন্ট মন্তব্য করেছেন, ‘টি২০ ব্লাস্টের সময়কাল এতটাই দীর্ঘ যে এটি সব টুর্নামেন্টের সাথে সংঘর্ষে পড়ে।’
অনেকে মনে করছেন, নতুন নীতির মাধ্যমে ইসিবি দ্য হান্ড্রেড টুর্নামেন্টকে রক্ষা করতে চাইছে, যা বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
আইনি ব্যবস্থা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
খেলোয়াড়রা আইনি চ্যালেঞ্জ করার পরিকল্পনা করছেন। তারা যুক্তি দিচ্ছেন যে এই নীতি "বাণিজ্যের স্বাধীনতা" লঙ্ঘন করে। পিসিএ জানিয়েছে যে খেলোয়াড়দের চুক্তি পুনর্বিবেচনার প্রবণতা বাড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, লুক উড এবং সাকিব মাহমুদের মতো খেলোয়াড়রা আংশিক খেলার শর্তে সাদা বলের চুক্তি করতে পারেন।
ইসিবি জানিয়েছে, তারা খেলোয়াড়দের আয় ও অভিজ্ঞতার সুযোগকে সম্মান করে। তবে ক্রিকেটের সার্বিক অখণ্ডতা এবং খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা রক্ষায় নতুন নীতির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
ইংলিশ ক্রিকেটে এই বিতর্ক ভবিষ্যতে খেলোয়াড়দের চুক্তি ও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। খেলোয়াড়, বোর্ড এবং আইনি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে আলোচনা কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।