শুভ্র মেঘের দলে, কাশবনে এসেছে আশ্বিন

13 hours ago 5

শুভ্র মেঘের দলে ভেসে এলো আশ্বিনের বার্তা। কাশবন দুলে উঠছে সাদা রূপে, প্রকৃতির ক্যানভাসে ফুটে উঠছে শান্ত সৌন্দর্য। আজ পহেলা আশ্বিন। ষড়ঋতুর বাংলা পঞ্জিকার ষষ্ঠতম মাস আশ্বিন। অশ্বিনী নক্ষত্রের নামানুসারেই আশ্বিন মাসের নামকরণ।

বাংলার ঋতুচক্রে আশ্বিন মানেই আকাশজুড়ে ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘ, রোদের কোমলতা আর হাওয়ার মিষ্টি ছোঁয়া। ভোরের কুয়াশা যেন শিউলি ফুলের সুবাসে ভিজে ওঠে। দিনের বেলায় নীল আকাশে জমে ওঠে তুলোর মতো সাদা মেঘ, আর বিকেলে হালকা শীতল হাওয়া জানান দেয় শীতের আগমনী বার্তা।

আশ্বিন শুধু প্রকৃতির রূপ বদল নয়, উৎসবেরও মাস। সামনে দুর্গাপূজা, লক্ষ্মীপূজা—বাঙালির সবচেয়ে বড় ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক উৎসবগুলোর প্রস্তুতি শুরু হয় এ সময়। কাশবনে খেলা করা শিশুরা, পাড়ায় পাড়ায় ঢাকের আওয়াজ, আর মণ্ডপে মণ্ডপে রঙতুলির ছোঁয়া—সব মিলিয়ে আশ্বিন হয়ে ওঠে আনন্দ আর আবেগের মাস।

প্রকৃতিপ্রেমীরা বলেন, আশ্বিনের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো প্রকৃতির কোমলতা। না অতিরিক্ত গরম, না তীব্র শীত—একটা ভারসাম্যপূর্ণ আবহাওয়া। তাই অনেকেই এই সময়কে ভ্রমণ ও ঘুরে বেড়ানোর জন্য সেরা সময় হিসেবে মনে করেন।

আকাশ, বাতাস, কাশবন আর শিউলির সুবাসে ভরে উঠুক আশ্বিন। প্রকৃতি হোক প্রাণময়, আর বাঙালির হৃদয়ে জেগে উঠুক উৎসবের উচ্ছ্বাস—এই প্রত্যাশাতেই শুরু হলো শরতের এ শুভদিন।

আশ্বিন শুধু প্রকৃতিকে মুগ্ধই করে না, একে বলা হয় উৎসবের ঋতু। সনাতন ধর্মাবলম্বী বাঙালিদের কাছে এ মাস পরম পবিত্র ও শ্রদ্ধার। আশ্বিনের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত চলে শারদীয় দুর্গাপূজা—বছরের সবচেয়ে বড় ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক আয়োজন। এই শুক্ল পক্ষকেই বলা হয় দেবীপক্ষ। দেবীপক্ষের সূচনা হয় মহালয়ার মাধ্যমে। অমাবস্যার এই দিনে বাঙালি হিন্দুরা তর্পণ করে পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শুরু হয় দুর্গোৎসব, যার পরিসমাপ্তি ঘটে বিজয়া দশমীতে।

আশ্বিনের পূর্ণিমা তিথি বিশেষ তাৎপর্যময়। দিনটি ‘কোজাগরী পূর্ণিমা’ নামে পরিচিত। এদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করেন। তাদের বিশ্বাস—বছরের সবচেয়ে উজ্জ্বল রাতটি হলো আশ্বিনের এই পূর্ণিমা, যখন ধনসম্পদ, প্রাচুর্য ও সৌন্দর্যের দেবী লক্ষ্মী বিষ্ণুলোক থেকে নেমে আসেন পৃথিবীতে।

Read Entire Article